ঈশ্বরদী(পাবনা)প্রতিনিধি ->>
ঈশ্বরদীতে বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকা কালিন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জাকারিয়া পিন্টুকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সোমবার ২৭ জুন দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। শনিবার ২৫ জুন রাতে কক্সবাজার জেলা টেকনাফ উপজেলায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত জাকারিয়া পিন্টু(৫০) ঈশ্বরদীর পিয়ারাখালী কাচারীপাড়ার মৃত আব্দুস সামাদ এর ছেলে। তিনি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। পৌরসভা নির্বাচনেও তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পাবনা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, র্যাবের বিশেষ অভিযান চালিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আত্মগোপনে থাকা বিএনপি নেতা পিন্টুকে গ্রেফতার করে।
এরপর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রবিবার ২৬ জুন রাতেই পিন্টুকে ঈশ্বরদী থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে বিশেষ নিরাপত্তজনিত কারণে তাকে রাতেই জেলা ডিবি হেফাজতে রাখা হয়।সোমবার ২৭ জুন দুপুর ২টার দিকে তাকে আদালতে সোপর্দ করার পর পাবনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ২৮ বছর আগে ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী এবং ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে বোমা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৩ জুলাই ঢাকার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক ঈশ্বরদী বিএনপির শীর্ষ ৯ নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
এই মামলা ছাড়াও জাকারিয়া পিন্টু কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানায় অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মোট ২৪টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি তিনি।
আলোচিত এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত ৪৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। এর মধ্যে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। ২০১৯ সালের ৩ জুলাই স্পেশাল ট্রাইবুনাল আদালতের বিচারক কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার আগের দিন ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে ভারতে পালিয়ে যান। তারপর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে আসামি পিন্টু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পলাতক ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি এ কে এম আক্তারুজ্জামান (৬৪), ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান সভাপতি এ কে এম আক্তারুজ্জামান (৬৪), ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোখলেছুর রহমান বাবলু (৬১), পৌর যুবদলের সভাপতি মোস্তফা নুরে আলম শ্যামল (৪৫), স্থানীয় বিএনপি নেতা রেজাউল করিম শাহীন (৫০), শহিদুল ইসলাম অটল (৪৫), আজিজুর রহমান শাহিন (৪৬), মাহবুবুর রহমান পলাশ (৫৪), শামসুল আলম (৫৫)। তাদের মধ্যে জাকারিয়া পিন্টু পলাতক ছিলেন। অন্যরা কারাগারে, এদিকে পিন্টুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা জানিয়ে রবিবার ২৭ জুন রাতে শহরের রেলগেটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করেন।
এ সময় পথসভায় পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক (একাংশ) এস এম ফজলুর রহমান বলেন, বিএনপির প্রাণপুরুষ জাকারিয়া পিন্টুকে ঢাকায় মিডিয়া ইউং থেকে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, সর্বহারা, প্রভাবশালী আখ্যা দিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের নেতাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের উদ্দেশ্যে এসব আখ্যা দিয়েছেন, এটা আমাদের কষ্ট দিয়েছে।
এ সময় বিএনপি নেতা আহসান হাবীব, বিষ্টু সরকার, আক্কাস আলীসহ দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :