শাহ্ আলম লিটন, কথাসাহিত্যক ও কলামিষ্ট
বর্তমান সময়টি আধুনিক যুগের কবলে পড়ে মানুষের জীবনযাএায় মারাতœক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।কৈশর, যুবক, মাঝবয়সি, বৃদ্ধা সবার হাতে এখন দামী স্মার্টফোন। স্কল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদেও মধ্যে শতকরা নিরানববাই জনই দামিদামি ব্যান্ডের মোবাইল ব্যবহার করেন।
এইসব মোবাইলে চরিত্রহীন হওয়ার জন্য যা যা দরকার সবই আছে এর ভেতর। এরকম অবস্থায় নিজেদেও চরিত্র ঠিক রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে। এগুলো সমাজের রন্ধে রন্ধে সমাজের পরিস্থিতি দিনদিন ভয়াভহ হয়ে উঠছে। সমাজে এরসাথে যোগ হচ্ছে ইভটিজিং,ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ঘুষ, দুর্নীতি সন্ত্রাস মাদকে বিষাক্ত ছোবলে সমাজ দিনদিন কলুষিত হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ দক্ষিন এশিয়ার ছোট ভূখন্ডে বিপুল জনসংখ্যার আবাসস্থল। এ ভূমিতে প্রতিনিয়ত লোক সংখ্যা বাড়ছে। খাদ্যেও চাহিদার পাশাপাশি বাড়ছে। এর পাশাপাশি কমছে কৃষি জমির পরিমান। সমাজ হয়ে যাচ্ছে ঘনবসতিপূর্ণ। একারণে অপরাধ ও দিনদিন বেড়ে চলছে। অনেকে মনে করেন, মা বাবা সন্তানকে নৈতিক সুশিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত কওে গড়ে তুলতে পারছেন না বলেই এমন অনভিপ্রেত ও দুঃখ জনক ঘটনা ঘটে চলছে। কোন ক্রমেই এমনটা মানুষের কাম্য হতে পারেনা।
বর্তমান আধুনিক যুগে মা বাবাকে মোবাইল নিয়ে বসে থাকলে চলবেনা। অথবা মা – বাবা আজকাল অফিস আদালতে কাজকর্মে এতোটা ব্যাস্ত থাকেন যে, সন্তানকে সময়ই দিতে পারেননা। সন্তান লালন – পালনের দায়িত্ব বাসার কাজের বুয়ার উপর ছেড়েদেন। ফলে সারাদিন তার কাছে থাকছে, তার আচার– আচরনই শিখছেন। ছোটবেলা থেকেই সন্তানের চরিত্র গঠনে মা বাবাকে গুরুত্ব পূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে। পারিবারিক সুশিক্ষা ও ধর্মীও শিক্ষা পালনে মা বাবার ভূমিকা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সমাজের যুবকরা যাতে মাদক ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়তে না পাওে সেদিকে পিতা – মাতা ও সমাজের কর্তাব্যক্তিদেও পরিকল্পনা হাতে নিয়ে গুরুত্বের সাথে এগিয়ে আসা দরকার। কারন বাংলাদেশে মাদকের হাজার হাজার আস্থান ারয়েছে। এগুলো রোধ করা অসম্ভব হলে ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত কওে গড়ে তুলতে পারলে তা রোধ করা সম্ভব হবে। ইসলাম দৃষ্টিকটু, রুচিহীন ও অসুন্দরকে সমর্থন করেনা। একারনে সমাজের যুবসমাজকে ধর্মীয় অনুশাসন ও শিক্ষাকে সর্বচ্চো শিক্ষায় শিক্ষিত কওে গড়ে তুলতে পাড়লে নানা মুখী অপরাধ থেকে ফিরিয়ে রাখা সম্ভব।
আসলে সময়টা ঐুন আধুনিক হচ্ছে, সমাজে, পরিবাওে মা বাবার দায়িত্ববোধও কমে যাচ্ছে।পিতা – মাতার প্রতি সন্তানের তেমন টানও দেখা যাচ্ছেনা। এতে কওে মা বাবার কথা শুনছেন না। যার কারণে কারও প্রতি কারো মায়া মমতা নেই। দুনিয়ার সুখ নামক হরিণের পেছনে ছুটতে ছুটতে মানুাষ বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। টাকা চাই, প্রচুর টাকা চাই, অর্থচাই, যাতে সুখ নামক হরিণটা কিনতে পারি। এই করে কওে স্বামি – স্ত্রী দুজনই বৈধ অবৈধ টাকা রোজগারের নেশায় সন্তানকে সময় দিতে ভুলে যাচ্ছে। সময় পাচ্ছে না সন্তানকে মানুষ হওয়ার প্রকৃত শিক্ষা দিতে। অথবা কাজের চাপে সন্তানের সুশিক্ষার দিকে নজর দিতে পারছেনা। ফলে তারা শিক্ষাগ্রহনের জন্য আশ্রয় নিচ্ছে কোচিং, প্রাইভেট কিংবা গৃহশিক্ষকের কাছে। ফলে নৈতিক শিক্ষা থেকে দুওে চলে যাচ্ছে। ফলে তাদেও মনে অবৈধ বাসনা ও কামনা জাগ্রত হয় ধীরে ধীরে।
অপরাধ জগৎ সন্তানকে যেন ধীওে ধীরে গ্রাস না করতে পারে সেদিকে পিতা – মাতার মনোযোগী হতে হবে। একটি শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র হচ্ছে তার পরিবার। মেধ বিকাশের আগ পর্যন্ত পরিবারের পরিবেশ ও শিক্ষাতার মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। তাই পরিবারে প্রত্যেক পিতা–মাতার সন্তানের মানসিক বিকাশ ও নৈতিক চরিএ গঠনে সুশিক্ষা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। স্কল কলেজ শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত কওে সন্তানকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়তে হবে। ইসলামি শিক্ষাই পাড়ে সন্তানকে সুরক্ষিত রাখতে। নৈতিক গুণাবলি সমূদ্ধ হয়ে চারিত্রিক গুনাবলি বিকশিত হয়।
প্রশ্ন উঠতে পারে! তাহলে কি একাডেমিক লেখা – পড়া দরকার নেই? দরকার আছে। একাডেমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লেখাপড়া করে শিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত হওয়া যায়। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে অন্যদেশের ডিগ্রী অর্জন করা যায়। দেশে এসে নাম কুড়ানো যায়। চেতনা বিকশিত হয়না। বিবেক ও মানবতাবোধ কে জাগ্রত করেনা। ধর্মীয় শিক্ষা মানুষের দেহমন সবসময় পবিত্র রাখে। অন্যায় অবিচার, অপবিত্র, ঘুষ, দুর্নীতি থেকে রক্ষা করে। ইসলাম শুধু একটি ধর্মের নাম নয়, এটি একটি পূর্ণঙ্গ জীবন পেতে কোরআান ও সুন্নার অনুসরনে কোন বিকল্প নেই।
পরিবারে মা – বাবাই শিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষার সূচনা করেন। সমাজে সন্তানের ভিত্তিভূমি। পরিবার থেকেই শিশুর চরিত্রের ভিত্তি গড়ে উঠে। এসময় যদি চারিত্রিক গুনাবলি কোরআন ও হাদিস অনুসাওে বিকশিত নাহয় তাহলে পারিপাশ্বিক পরিবেশকে সুশোভিত ও মোহিত করতে পারবেনা। এজন্য কিয়ামতের দিন পিতা – মাতাকে এর জবাবদিহিতা করতে হবে।
শিশুকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত কওে গড়ে তুলতে হবে। শিশুকিশোরদেও ভবিষ্যত নিরাপত্তার জন্য নবী করিম ( সাঃ) বলেছেন, তোমার সন্তানকে অন্যের উপর নির্ভরশীল কওে রেখে যাওয়ার চেয়ে তাদেও অপেক্ষা কৃত স্বচ্ছল রেখে যাওয়া অনেক ভালো, ( বুখারিহাদিস৬৭৩৩) তাই বৈধ পন্থায় সন্তানের জন্য কিছু সম্পদ রেখে যাওয়ার চেষ্ট করতে হবে তাদেরকে সুশিক্ষা ও ইসলামি আলোকে শিক্ষিত করতে হবে। সে শিক্ষিত হলে সারাজীবনই সচ্ছল থাকবে। পরনির্ভরশীল হতে হবেনা। সন্তানকে সুন্দর অচরন– ব্যবহার শিক্ষা দেওয়ার প্রধান দায়িত্ব মা – বাবার উপর।
আপনার মতামত লিখুন :