ArabicBengaliEnglishHindi

রাজশাহীতে শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করালেন প্রধান শিক্ষিক


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ২৬, ২০২২, ৭:৫৪ অপরাহ্ন / ২৪৭
রাজশাহীতে শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করালেন প্রধান শিক্ষিক

রাজশাহী প্রতিনিধি ->>
ফেসবুকে ব্যক্তিগত ছবি ও টিকটক ভিডিও আপলোড করায় রাজশাহীতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

 

মসজিদ নির্মাণ কাজে আর্থিক সাহায্যের আবেদন

 

বুধবার (২৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পবা উপজেলার হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগ, ঘটনা জানাজানি হলে তাকে বদলি এমনকি চাকরিচ্যুতিরও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত খবর বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তা ভাইরাল হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষিকা রাজশাহী মহাগরের হড়গ্রাম রায়পাড়া এলাকার বাসিন্দা। ২০০৮ সাল থেকে তিনি হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগ, বুধবার বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর প্রধান শিক্ষিকা নাজমা ফেরদৌসি ফেসবুকে ছবি দেওয়া নিয়ে সবার সামনেই তাকে তিরস্কার করেন। এরপর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বাবা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল আজিজকে ডেকে আনেন। আব্দুল আজিজ তাকে কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করেন।

তার দাবি, তিনি মূলত বাটনযুক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তার একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন থাকলেও সেটি বাসায় থাকে। অধিকাংশ সময় তার শিশু সন্তানরা সেটিতে গেম খেলে, ছবি তোলে। ওই ফোনে ফেসবুক আইডি চালু থাকলেও সেটি তিনি ব্যবহারে অভ্যস্ত নন। তার অজান্তে মোবাইলে থাকা সব ছবি দিয়ে টিকটক ভিডিও বানিয়েছিল শিশুরা। কিন্তু জানতে পেরে সেগুলো মুছে দিয়েছিলেন তিনি।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা জানান, গত শনিবার রাতে তাকে বান্ধবীর সঙ্গে তোলা একটি ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান প্রধান শিক্ষিকা। ফোন ওই সময় তার বোনের কাছে ছিল। অসাবধানতায় ছবিটি ফেসবুকের মাইডেতে চলে যায়। গত রোববার সকালে তিনি বিদ্যালয়ে গেলে তাকে প্রধান শিক্ষিকার ছবি ফেসবুকে শেয়ার করা নিয়ে জেরা করেন আরেক সহকারী শিক্ষিকা ইসমত আরা শিউলি।

বিষয়টি অসাবধানতাবশত উল্লেখ করে তিনি ক্ষমা চান। পরে তার বাড়িতে আরেক সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন সুলতানা ববিকে পাঠিয়ে জোর করে মোবাইল ফোনটি বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন প্রধান শিক্ষিকা নাজমা। পরে তাকে কান ধরে ওঠবস ও হেনস্তা করা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা বলেন, এ ঘটনায় তিনি চরমভাবে অপমানবোধ করেছেন। বিষয়টি তিনি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুনা লায়লাকে জানিয়েছেন। প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দফতরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু অফিস ছুটি হয়ে যাওয়ায় অভিযোগ দেওয়া যায়নি।

তবে ওই শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষিকা নাজমা বলেন, ওই শিক্ষিকা দীর্ঘদিন ধরেই তার ব্যক্তিগত ছবি নিজের ফেসবুকে দিয়ে আসছিলেন। টিকটক ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে প্রচারও করে আসছিলেন। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তিনি তা আমলেই নেননি। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, ঘটনাটি দুই শিক্ষিকার দীর্ঘদিনের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই ঘটেছে বলে মনে হয়েছে। দু’পক্ষকে নিয়ে বসে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বুধবার বিকেলের দিকে প্রধান শিক্ষিক মোবাইলে তাকে একটি সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি খোলাসা করেননি। তাছাড়া ভুক্তভোগী এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, এমন কোনো অভিযোগের বিষয় তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।