এনামুল হক শামীম ->>
সাভারে হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে থ্রিহুইলার যানের শ্রমিকরা মহাসড়ক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি আয়োজন করে। এসময় পুলিশের বাঁধার সম্মুখীন হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অগ্নিসংযোগসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটনায়। এতে পুলিশের এক সদস্য সহ রিকশা শ্রমিকদের অন্তত ১৫জন আহত হয়েছে।
চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা বলে দাবি করেছেন হাইওয়ে থানা পুলিশ।
সোমবার সকাল ১১টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ী এলাকায় প্রায় ২ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে, পাঁচ শতাধিক থ্রি হুইলার শ্রমিক। পরে পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
তবে এঘটনায় কাওকে আটক করেনি থানা পুলিশ।
রিকশাচালক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। আমার পেটে চারটা অপারেশন। দুই সাওয়াল নিয়া ফ্যামিলি আমার। রিকশা চালানো ছাড়া কোন কাজ করতে পারি না। হাইওয়ে পুলিশ রিকশা ধইরা ৫ হাজার করে ট্যাকা করে নেয়। নিয়া খাতাত ২০০০ ট্যাকা লিখে দেয়। আমরা ঋণ কইরা সেই ট্যাকা দেই। মাঝে মধ্যে থানার ভিতর থাইকা আমাগো গাড়ি আবার চুরি কইরা বেইচাও দেয়।’
আনিছুর রহমান নামে আরেক চালক বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশ আমাদের গাড়ি ধরে ট্যাকা নেয়, মারধর করে। গত ১৩ তারিখেও আমি ৫২০০ ট্যাকা দিয়া রিকশা ছাড়ায় আনছি। ভিতরের রাস্তা থাইকাও পুলিশ রিকশা নিয়া ধইরা নিয়া যায়। আইজ আমাদের দাবি নিয়া আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতেছিলাম। কিন্তু পুলিশ আচমকা আইসা লাঠিচার্জ করে আমাদের ১২-১৪ জনের মতো আহত করছে। আমাদের বেশ কয়েকজনকে ধরেও নিয়ে গেছে পুলিশ।’
অটোরিকশা ও ভ্যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, পুলিশি হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধ, থ্রি হুইলার চলাচলের জন্য আলাদা লেন ও স্ট্যান্ড নির্মাণ, থ্রি হুইলার চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানসহ পাঁচ দফা দাবি জানান তারা।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে চলা থ্রি হুইলারের বিরুদ্ধে আমার নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। এরই জেরে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে নানা কথা বলছে। আমরা থ্রি হুইলার আটক করে ২৫০০ টাকার মামলা দেই। ইউক্যাশের মাধ্যমে চালকরা তা পরিশোধ করেন। ইউক্যাশের চার্জসহ ২৬০০ টাকা হয় জরিমানা। আর একি চালক দুইবার জরিমানার আওতায় এলে তখন সরকারি ভাবেই সেই টাকার পরিমাণ ৫০০০ হয়।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান বলেন, এরা হাইওয়ে রোডে রিকশা চালাতে চায়। কিন্তু এরা হাইওয়েতে রিকশা চালাতে চায়। শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে আমাদের এক পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে প্রাথমিক ভর্তি করা হয়েছে।
‘তবে চাঁদাবাজি না। হাইওয়ে পুলিশ না কি তাদের ডিস্টার্ব করে এজন্যই তারা সড়কে নেমেছে। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি, এধরণের কোন অভিযোগ পেলে আমি ব্যবস্থা নেবো। বর্তমানে সড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা কাউকে আটকও করিনি।
আপনার মতামত লিখুন :