নিজস্ব প্রতিবেদক ->>
বৈশাখের শুরুতে নওগাঁর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে কালবৈশাখীর তাণ্ডব। প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হয়েছে বৃষ্টি। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত ৩টায় এবং বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৬টায় দু’দফায় জেলার ওপর দিয়ে ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে। এতে ইরিবোরো ধানের ক্ষতি হলেও আমের জন্য উপকার হয়েছে।
ঝড়ো বাতাস স্থায়ী ছিলো প্রায় আধা ঘণ্টা। প্রচণ্ড ঝড়ের পর শুরু হয় বৃষ্টি। ঝড়-বৃষ্টিতে ধান ও সবজি জাতীয় ফসলের ক্ষতি হলেও আমের জন্য আশির্বাদ হয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইরিবোরো আবাদ ভালো হয়েছিল এবার। মাঠে শুরু থেকেই ধান ভালো ছিল। কিছু মাঠে ধান পাকতেও শুরু করেছে। ঝড় বৃষ্টিতে পাকা ও আধাপাকা ধানের ক্ষতি হলেও যেসব ধান এখন বের হচ্ছে তার জন্য উপকার হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা মাড়াই শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন কিছুটা দেরি হবে। বৃষ্টিতে মাঠের নিচু জমিতে পানি জমেছে। ধান জমিতে শুয়ে পড়ায় ধান চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলার মান্দা উপজেলার ভারশোঁ গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, তিন বিঘা জমিতে জিরাশাইল ধানের আবাদ করেছিলাম। আগামী এক সপ্তাহ পর কাটা মাড়াইয়ের কথা ছিল। হঠাৎ ঝড় বৃষ্টিতে জমিতে সব ধান শুয়ে পড়েছে। বিঘাপ্রতি যেখানে ২৪-২৫ মণ ফলন পাওয়ার কথা ছিল সেখানে বিঘা প্রতি ২-৩ মন ফলন কম হবে। এছাড়া ধান কাটতেও শ্রমিক খরচ বেশি হবে বলে জানান তিনি।
পত্নীতলা উপজেলার নির্মইল ইউনিয়নের হলাকান্দর গ্রামের আমচাষি আমানুল্লাহ আমান বলেন, প্রায় ৪০ বিঘা জমির আমবাগান ইজারা নিয়েছি। যেখানে আম্রপালি, ফজলি ও গোপালভোগ জাতের গাছ আছে। গাছে প্রচুর পরিমাণ আমের গুটি এসেছিল। কিন্তু অনাবৃষ্টিতে মাটিতে রস কমে যাওয়ায় গুটিগুলো ঝরে পড়ছিল। গুটি রক্ষার জন্য শ্যালোমেশিনের সাহায্যে গাছে পানি স্প্রে করতে হতো। এতে বাড়তি খরচ হতো। তবে হঠাৎ বৃষ্টিতে আম চাষিদের জন্য উপকার হয়েছে। মাটিতে রস জমেছে। এখন খরচ অনেকটা কমে আসবে। ঝড়ে কিছু গুটি ঝরে পড়লেও সমস্যা নেই উপকার বেশি হয়েছে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেন, ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হলেও আমের জন্য উপকার হয়েছে। ঝড়ের কারণে আধাপাকা ধানগুলো মাটিতে শুয়ে পড়েছে। তবে পাকা এবং আধা পাকা ধান হওয়াই খুব একটা ক্ষতি হবে না।
তিনি বলেন, অনাবৃষ্টিতে আমের গুটিগুলো ঝরে পড়ছিল। এই বৃষ্টি আমের জন্য আশির্বাদ স্বরূপ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বদলগাছীর ওপর দিয়ে রাত ৩টায় এবং বুধবার সকাল ৬টায় দু’দফায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। একইসঙ্গে ৩৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :