ArabicBengaliEnglishHindi

উৎপাদন কম ও সরবরাহ ঘাটতি থাকায় বাড়ছে মুরগি ও ডিমের দাম


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১০, ২০২২, ৬:৪৬ অপরাহ্ন / ৪৭৮
উৎপাদন কম ও সরবরাহ ঘাটতি থাকায় বাড়ছে মুরগি ও ডিমের দাম

আলতাফ হোসেন অমি ->>
উৎপাদন কমে সরবরাহ ঘাটতিতে মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ছে। বর্তমানে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বহু উদ্যোক্তাই টিকতে না পেরে ইতোমধ্যে খামার গুটিয়ে নিয়েছে। মূলত দেশে চলমান লোড শেডিং, পোলট্রি খাদ্যের উচ্চমূল্য এবং জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের পোলট্রি খাতে মহাবিপর্যয় নেমেছে। গত ৬ মাসে কমে গেছে ১০ হাজারের বেশি পোলট্রি খামার। বাজারে তারই প্রভাব পড়েছে। পোলট্রি খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

গংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রতি মাসে দেশে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন পোলট্রি খাবারের চাহিদা রয়েছে। ওই চাহিদার শতভাগই দেশি ফিডমিল থেকে আসে। কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিগত এক বছরে প্রাণিজ খাবারের উৎপাদন খরচ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। তার ওপর লোড শেডিং ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাম বেড়ে বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা এবং সোনালি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। মুরগি ও ডিমের দাম লাগামহীন হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কাও বাড়ছে।

সূত্র জানায়, পোলট্রি খাদ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে খামারিদের দিশেহারা অবস্থার মধ্যেই দৈনিক আট থেকে ১০ ঘণ্টার লোড শেডিংয়ের কারণে পোলট্রি বাচ্চা, মাংস ও ডিমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ডিম থেকে বাচ্চা তৈরিতে ইনকিউবেটরসহ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত কক্ষে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। কিন্তু চলমান লোড শেডিংয়ের কারণে ব্রয়লারের বাচ্চা উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। আর জেনারেটর চালিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখলেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। ফলে খামারিরা মুরগির বাচ্চা কিনতে ভয় পাঁচ্ছে। কারণ খামারে বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ প্রয়োজন। আট থেকে ১০ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের প্রভাব মোকাবেলায় ছোট খামারিরা জেনারেটর ব্যবহার করতে পারছে না। ফলে অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেক খামারেই মুরগি মারা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে খরচ বহন করতে না পেরে অনেক খামারিই উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে। আর তাতেই তৈরি হয়েছে সরবরাহে সংকট।

এদিকে এ প্রসঙ্গে পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মহসিন জানান, লোডশেডিংয়ের প্রভাব ও খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে গত ৬ মাসে ১০ হাজারের বেশি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে দেশে খামারের সংখ্যা কমে ৭৮ থেকে ৭৯ হাজারে দাঁড়িয়েছে। তার মধ্যে ক্ষতির মুখে পড়ে আরো বেশ কিছু খামার বন্ধের পথে রয়েছে। মূলত পোলট্রি খাদ্যের উচ্চমূল্য ও অতিরিক্ত লোড শেডিং সমস্যার কারণেই খামারিরা উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে। কারণ উচ্চমূল্যে ডিজেল কিনে জেনারেটর চালিয়ে ব্যয় সামাল দেওয়া ছোট-মাঝারি খামারিদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে বড় পরিসরের খামারিরা বর্তমানে পোলট্রি খাতের সব সুযোগ-সুবিধা পাঁচ্ছে। তাঁরা যেসব সুবিধা পাঁচ্ছে সেগুলো ছোট খামারিদেরও প্রয়োজন। ছোট খামারগুলোতে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি স্থাপনের ক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা দরকার।