গাজীপুর প্রতিনিধি ->>
সরকারের হিসাব মতে দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকলেও গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নিয়মিত ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে অতিষ্ট ও তীব্র যন্ত্রনায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় জনজীবন। বিদ্যুতের যাওয়া-আসার এমন খেলায় চরম বিপাকে পড়েছেন পোল্ট্রি ও গরুর খামারী এবং শপিংমলসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এর প্রভাব পড়ছে শিল্প-প্রতিষ্ঠান গুলোতেও। স্থানীয়দের অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে এক পাশের বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে অন্য পাশে চালু রাখায় ঘনঘন এ লোডশেডিংয়ের সৃষ্টি হচ্ছে।
এলাকাবাসী ও পল্লীবিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় কালিয়াকৈর উপজেলায় কালিয়াকৈর, চন্দ্রা ও মৌচাক নামে তিনটি জোনাল অফিস রয়েছে। কালিয়াকৈরকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এখনো বিদ্যুৎ পৌছায়নি অনেক বাড়িতে। এ বর্ষা মৌসুমে সেচ প্রকল্পের আওতায় প্রায় শতভাগ সেচ পাম্প বন্ধ থাকলেও এখানে বিদ্যুতের ঘাটতি যেন উল্টো বেড়েছে। নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে ঘনঘন লোডশেডিং। মাঝে মধ্যেই সকাল হতে না হতেই শুরু হয় লোডশেডিং। কখনো কখনো নোটিশ ও মাইকিং ছাড়াই দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। এতে চরম দূর্ভোগে পড়ছেন মানুষ। এছাড়াও আকাশে মেঘের কালো ছায়া দেখা দিলে বা সামান্য বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ থাকে না। মেঘ সরে গেলে ও বৃষ্টি চলে গেলেও ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুতের মুখ দেখা যায় না। নিয়মিত ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে অতিষ্ট ও তীব্র যন্ত্রনায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনজীবন। বিদ্যুতের যাওয়া-আসার এমন খেলায় চরম বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন এলাকার পোল্ট্রি ও গরুর খামারী এবং শপিংমলসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এর প্রভাব পড়ছে শিল্প-প্রতিষ্ঠান গুলোতেও। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী ও রোগীরা। নিয়মিত বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলার বিষয়ে ফোন দিলে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে বলেও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের উদাসিনতার কারণে এমন ঘনঘন লোডশেডিংয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সাজানো ও কথিত বিদ্যুৎ বিতরণ ও স ালনের লাইনে ক্রুটির কথা জানিয়ে কোনো রকমে দায় এড়িয়ে যাচ্ছে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন ধরে এমন লোডশেডিং হলেও কোনো সুরাহার ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।
আবাসিক এলাকার ভাড়াটে এক পোশাক কারখানার সিনিয়র অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান এবং চান্দরা এলাকার সেকান্দার আলীসহ অনেকেই বলেন, এ উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। তারপরও প্রতিদিন বার বার লোডশেডিং হচ্ছে। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা বিঘিœত হচ্ছে। তাছাড়া সপিংমলসহ ব্যবসায়ীদের যেন দূর্ভোগ আর ভোগান্তির শেষ নেই।
কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান জানান, গ্যাসের সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কখনো কখনো ব্যারেল পড়ে যায়। এসব কারণে বিদ্যুতের এমন সমস্যা হচ্ছে।
লোডশেডিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে চান্দরা পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী মোঃ কামাল হোসেন জানান, বিভিন্ন এলাকায় লাইন মেরামতের কাজ যখন করা হয়, তখন ওই এলাকার বিদ্যুৎ লাইন সাময়িকের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :