খেলার মাঠ পুলিশের দখলে,শিশুদের নির্যাতনের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২২, ৬:৪৭ অপরাহ্ন /
১২২
এমদাদুল হক শ্রাবণ ->>
ঢাকা: কাটাঁ তারের বেড়া ও সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে তেঁতুল তলা মাঠ দখলে নিয়েছে রাজধানীর কলাবাগান থানা পুলিশ। শুধু তাই নয়,ওই মাঠে খেলতে যাওয়া শিশুদের নির্যাতন করার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে,মাঠে খেলতে যাওয়া শিশুদের কান ধরে উঠবস করিয়ে তার ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারন করে এবং ওই মাঠে পুনরায় খেলতে যেতে শিশুদের নিষেধ করে কলাবাগান থানা পুলিশের সদস্যরা।
কোমলমতি শিশুদের ওপর পুলিশের এধরনের নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা গভীর ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন।
তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনায় যে সকল পুলিশ সদস্যরা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রশাসনিক নিয়মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ৩১শে জানুয়ারি মঙ্গলবার রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকার তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন নির্মাণের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়।এরপর সেদিন দুপুরেই থানা পুলিশের ১০-১২ জন সদস্যের উপস্থিতিতে মাঠের চারপাশে তার কাঁটার বেড়া দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলবার পুলিশ সদস্যরা মাঠে কাঁটা তারের বেড়া দেওয়ার সময় শিশুরা খেলা থামায়নি।সেদিন রাতে ওই শিশুদের খুঁজে বের করে মাঠের সামনে এনে কান ধরে উঠবস করায় পুলিশ সদস্যরা।এছাড়া ওই শিশুরা যাতে মাঠে আর খেলতে না যায় সেজন্য নির্যাতনের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারন করে হুমকিও দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, এ ঘটনায় শিশুরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ঢাকা জেলা প্রশাসক আদালতের মাধ্যমে এই মাঠটি পুলিশের হেফাজতে দিয়েছে।যদি কোনো পুলিশ সদস্য মাঠে খেলার জন্য শিশুদের নির্যাতন করে থাকে,এবং তদন্ত সাপেক্ষে উপযোক্ত তথ্য প্রমাণ পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করিব।
ক্ষুব্ধ শিশুরা “দৈনিক জনতার বাংলাকে” জানায়, মঙ্গলবার থেকে তারা ঘরে বসে অলস সময় পার করছে। ইচ্ছে করলেও মাঠে যেতে পারছে না।
স্থানীয়রা বলছেন, তেঁতুল তলার মাঠ শুধু শিশুদের খেলার জন্য নয়,সেখানে ঈদের জামাতও অনুষ্ঠিত হয়।এছাড়া এলাকার কেউ মারা গেলে তাদের গোসল ও মরদেহ রেখে জানাজার নামাজ আদায় করা হয় সেখানে।সবমিলিয়ে মাঠটি এলাকাবাসীর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজন। কিন্তু কলাবাগান থানা পুলিশ এই মাঠ দখল করে ভবন নির্মাণের চেষ্টা করছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২১সালের ২৪শে আগস্ট ঢাকা জেলা প্রশাসনের এক নোটিসে বলা হয়, ডিএমপির কলাবাগান থানার নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য এই সম্পত্তি সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।জেলা প্রশাসনের ওই নোটিসে এই জমিকে পতিত জমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
ওই নোটিসের পর ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে কলাবাগানের বাসিন্দা, পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন, সমাজকর্মী, উন্নয়নকর্মী, সাংস্কৃতিককর্মী ও শিশু-কিশোররা এই নোটিসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,এ জায়গার প্রকৃত মালিক মুক্তিযুদ্ধের পর আর দেশে ফেরেননি। তাই ওই জমি পতিত হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে এতদিন।
আপনার মতামত লিখুন :