ArabicBengaliEnglishHindi

চট্টগ্রাম র‌্যাবরে অভিযান বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২২, ১:১৮ অপরাহ্ন / ১৫৮
চট্টগ্রাম র‌্যাবরে অভিযান বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক ->>
র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন জংগল সলিমপুর এলাকায় মশিউরের আস্তানায় ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারসহ কয়েকজন চিহ্নিত দূর্ধর্ষী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে আটক করেছে ।

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ছিন্নমূল জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় শিবলুর সেমিপাকা চিনসেট ঘরে কতিপয় চিহ্নিত দুষ্কৃতিকারী অবস্থান করছে।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে বর্ণিত স্থানে থাকা লোকজন এলোপাথারিভাবে দৌড়ে পালানোর চেস্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা আসামী ১। রফিকুল ইসলাম মালু (৪১), পিতা- মৃত শামসুল হক, সাং- চত্তন খোলা, থানা- নবীনগর, জেলা- ব্রাক্ষনবাড়িয়া, বর্তমানে শান্তিনগর, থানা- বায়েজিদ, চট্টগ্রাম মহানগরর, ২। মোঃ সিরাজুল ইসলাম (৩৪), পিতা- মৃত কফিল উদ্দিন, সাং- উপরামারা, থানা- পাটগ্রাম, জেলা- লালমনিরহাট বর্তমানে ১০নং জঙ্গল সলিমপুর, থানা- সীতাকুন্ড, জেলা- চট্টগ্রাম, ৩। মোঃ হাসান (৩৫), পিতা- আব্দুল মান্নান, সাং- আহাম্মদ নগর, থানা- শাহারাজতী, জেলা- চাঁদপুর বর্তমানে আলী নগর, থানা- বায়েজিদ, জেলা- চট্টগ্রাম মহানগর, ৪। জামাল শেখ (৪৭), পিতা- মৃত মজিদ শেখ, সাং- ১০নং জঙ্গল সলিমপুর, থানা- সীতাকুন্ড, জেলা- চট্টগ্রাম এবং ৫। মিজানুর রহমান কদর, পিতা- আহামদুর রহমান ফারুকী, সাং- ছনুুয়া (কুতুবখালী, আব্দুল লতিফপাড়া, ৭ নং ওয়ার্ড,ছনুয়া ইউপি), থানা- বাঁশখালী, জেলা- চট্টগ্রাম বর্তমানে ০৪ নং সমাজ, ছিন্নমুল, জঙ্গল ছলিমপুর, থানা- সীতাকুন্ড, জেলা- চট্টগ্রামদের আটক করে। গ্রেফতাকৃত আসামীদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের ব্যাপক অভিযান চালানো শুরু করতেই মশিউরের ছেলে সন্ত্রাসী শিবলুর নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী র‌্যাবকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে র‌্যাবের উপর অতর্কিত আক্রমন করতঃ র‌্যাবের কর্মকান্ডে বাধা প্রদানসহ গ্রেফতারকৃত আসামীদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে পাহাড়ী এলাকা থেকে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে দূর্গম পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।

নিজেদের জীবন ও অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষার্থে র‌্যাবও বিভিন্ন অস্ত্র দ্বারা ১২৯ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। র‌্যাব এলাকাটিকে ঘিরে রাখে পরবর্তীতে অধিক ফোর্স নিয়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশী শুরু হয়। অভিযান চলাকালীন সময় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর অধিনায়ক ঘটনাস্থল জঙ্গল ছলিমপুর অভিযানস্থলে ছুটে আসেন এবং অভিযানের নিবিড়ভাবে তদারক করেন। সন্ত্রাসীদের আক্রমন ও ইট পাটকেল ছোড়ায় কয়েক জন র‌্যাব সদস্য কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয় ।

অভিযানকালীন সময় বিভিন্ন স্থান ও সন্ত্রাসীদের নিকট হতে ১০ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ০১ টি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ০১ টি ধারালো ছোরা এবং মোট ২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও তাদের আস্তানা থেকে মিলিটারী গেজেট, মিলিটারী পোশাক, মিলিটারী বাইনোকোলার ও অবৈধ ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্ররের ভিত্তিতে পৃথক তিনটি অস্ত্র মামলা ও র‌্যাবের উপর আক্রমন, সরকারী কর্তব্যে বাধা প্রদানের কারনে একটি র‌্যাব এসোল্ট মামলা ও মিলিটারী উপকরণ রাখা ও অবৈধভাবে ধাতব মুদ্রা রাখায় পৃথক পৃথক মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তার দীর্ঘ দিন যাবৎ চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন জঙ্গল ছলিমপুর এলাকায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার, চাঁদাবাজী, সরকারী জমি প্লট আকারে লোক জনের কাছে বিক্রয় করে টাকা আদায় করে।

উক্ত এলাকায় গরীব বসতি লোক জনের নিকট হতে বিদ্যুতের মিটার না দিয়ে মশিউরের নিজ মিটারের মাধ্যমে বিদ্যুত সরবরাহ করে বিদ্যুতের সরকারী মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি টাকা আদায় করত। এছাড়াও উক্ত এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজী এবং নিজেদের অপরাধকর্ম চালিয়ে যাওয়ার স্বার্থে মশিউর ও তার ছেলে শিবলু একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে। উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত আসামী রফিকুল ইসলাম মালু (৪১) এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার বায়েজিদ থানায় ০১ টি মামলা রয়েছে এবং সে এলাকায় মালু নামে পরিচিত, ২। আসামী মোঃ সিরাজুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানায় ০৫ টি অস্ত্র মামলা রয়েছে, ৩। আসামী মোঃ হাসান (৩৫) এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানায় ০৭ টি মামলা রয়েছে, ৪। আসামী জামাল শেখ (৪৭) এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানায় ১০ টি মামলা রয়েছে এবং ৫। আসামী মিজানুর রহমান কদর এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানায় ১০ টিরও অধিক মামলা রয়েছে এবং সে এলাকায় অন্ধ জামাল ও বাবুর্চি জামাল নামে পরিচিত।

গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন ।