ArabicBengaliEnglishHindi

ডোমার সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়’র অর্ধকোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২, ৬:৫৯ অপরাহ্ন / ৯০
ডোমার সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়’র অর্ধকোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ

রুহুল আমিন,ডিমলা(নীলফামারী)প্রতিনিধি ->>
নীলফামারী জেলার ডোমার সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫টি কর্মচারী পদে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই অর্ধকোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উক্ত বিদ্যালয়ের ৫ জন চাকুরী প্রার্থী।

 

মসজিদ নির্মাণ কাজে আর্থিক সাহায্যের আবেদন

 

এ বিষয়ে তারা বৃহস্পতিবার(৮-সেপ্টেম্বর/২২) সকালে ডোমার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রমিজ আলমের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। যার অনুলিপি দেওযা হয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাকেরিনা বেগমের কাছে। তবে অভিযোগ দিলেও বৃহস্পতিবার রাতেই ডিমলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় ৫টি পদে নিয়োগ সম্পন্ন করেছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। যদিও সরকারী নির্দেশনা রয়েছে বিদ্যুত সাশ্রয়ের জন্য নিদিষ্ট সময়ের পর প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এদিকে কমিটির সভাপতিকে টাকা দিয়েও চাকুরী না হওয়ায় উক্ত বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য বদরুল আলমের মেয়ে লুৎফন নাহার বন্নী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়,নীলফামারীর ডোমারে সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫টি কর্মচারী পদে অর্ধকোটি টাকারও বেশি নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠায় এবং নিয়োগ বানিজ্যের টাকা আত্মসাত করার লক্ষে বিদ্যালয়ের সভাপতি ফিরোজ চৌধুরী ও প্রধান শিক্ষক রমনী রায়ের যোগ সাজশে ডোমারে পরীক্ষা না নিয়ে ডোমার থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দুরে ডিমলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করেন। পরীক্ষার দিন বৃহষ্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রমিজ আলমের কাছে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ তুলে নিয়োগ বন্ধের আবেদন করেন ৫জন চাকুরী প্রার্থী।

পরীক্ষা বন্ধের আবেদন জানানো প্রার্থীরা হলেন,ফজলে রাব্বী,সাহিনা আক্তার বানু, মো. শাহ আলম চৌধুরী, মো. যুবায়ের ইসলাম ও সাহেব আলী।

অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, উপজেলার সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ পাঁচজন কর্মচারী নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গোপনে টাকা নিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। পরিচালনা কমিটি পছন্দের প্রার্থীদের সমর্থনে লোক দেখানো প্রতিযোগীতার জন্য নিজ নিজ ডামি পরিক্ষার্থী ঠিক করে। ৮সেপ্টেম্বর বিকালে পাশ্ববর্তী ডিমলা উপজেলায় সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরিক্ষা নেওয়ার তারিখ ও সময় নির্ধারণ করেন। নিয়োগ কমিটি তাদের পছন্দের প্রার্থী ছাড়া অন্যেদের পরিক্ষার কথাও জানাননি। তাই তারা নিয়োগ পরীক্ষাটি বন্ধের দাবী জানিয়ে প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানান।

 

মসজিদ নির্মাণ কাজে আর্থিক সাহায্যের আবেদন

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন জানানো পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলেন। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলার পরও উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার ৫ চাকুরী প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়টি উপেক্ষা করেই সে বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নিয়েই পরীক্ষা নিতে তৎপর হয়ে পরেন। এবং সন্ধার পর পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেন। লিখিত ও মৌখিক পরিক্ষার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফলাফল ঘোষনা করা হয়। ফলাফল শুনে আয়া পদের লুৎফুন নাহার বন্নী নামে এক পরিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে স্বজনরা দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। লুৎফুন নাহারের পরিবারের দাবী টাকা দিয়েও চাকুরী না হওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমণী কান্ত রায় জানান, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রেক্ষিতে অফিস সহকারী পদে ২২জন, কম্পিউটার অপারেটর পদে ৯জন, অফিস সহায়ক পদে ৬জন, আয়া পদে ১৩জন ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ৯জন চাকুরী আবেদন প্রার্থীকে লিখিত পরিক্ষার জন্য ডাকা হয়। টাকা নিয়ে নিয়োগের বিষয়টি তিনি ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাকেরিনা বেগম জানান, অভিযোগকারীরা নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে অভিযোগ করেন। তাই এই মূহুর্তে নিয়োগ পরিক্ষা বন্ধ করা সম্ভব নয়, তবে তাদের অভিযোগটি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম ফিরোজ চৌধুরী বলেন, নিয়ম মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে। আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে চাপে রাখতে কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রমিজ আলম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।