ArabicBengaliEnglishHindi

দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে


প্রকাশের সময় : জুন ২১, ২০২৩, ৪:৫০ অপরাহ্ন / ৩৬৫
দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে

এম.মনির হোসেন ->>

দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। এক পরিসংখ্যানের তথ্যানুযায়ী গত দুই মাসে প্রতিদিন গড়ে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার তথ্য মিলেছে। আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত এক বছরে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিরোধ, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অপরাধমূলক ঘটনায় অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে।

 

আগামী জাতীয় নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার আরো বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে সমন্বিত চালাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সারাদেশে অভিযান চালিয়ে বিগত ২০২২ সালে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এক হাজার ৩৯৪টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ সময় ৬ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দেশি-বিদেশি রিভলভার ৭১টি, ১৯৫টি দেশি-বিদেশি পিস্তল, একটি এসএমজি, দুটি একে-৪৭ রাইফেল, একটি একে-২২ রাইফেল, তিনটি রাইফেল, ৪৪৩টি ওয়ান শ্যুটার গান, ৪১০টি এয়ারগান, ছয়টি শটগান, ৮২টি পয়েন্ট ২২ বোর রাইফেল, ৮৫টি এসবিবিএল, ২৫টি ডিবিবিএল, ৬৪টি এলজি, তিনটি কাটা রাইফেল, দুটি রকেট লঞ্চার শেল এবং একটি রকেট লঞ্চার। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে ৪৫০টি। তাছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশ ২০২২ সালে ৬৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৬২টি গুলি এবং চার হাজার ২৬৮ কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করেছে। এ সময় অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংক্রান্ত মামলায় ৪১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২২ সালে সারাদেশে আগ্নেয়াস্ত্রসহ পুলিশ ৫ হাজার ৮৭৯টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে। সূত্র জানায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্ধার করা অস্ত্রের বেশির ভাগই বিদেশি। ওসব অস্ত্র যশোরের বেনাপোল, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, সাতক্ষীরার শাঁকারা, মেহেরপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়াসহ অন্তত ৩০টি পথে সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ঢুকছে। আর কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্ত দিয়ে অস্ত্রের বড় চালানগুলো দেশে ঢোকে।

 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গোয়েন্দা তথ্যমতে, দেশের সীমান্তগুলোর অন্তত ৩২টি স্থান দিয়ে দেশে অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে। গত ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশে গুলির ঘটনা ১৫০টি ছাড়িয়ে গেছে। ওই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে ৫ জনেরও বেশি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে গত মে পর্যন্ত ১৬৫টি গুলির ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে দেশে বর্তমানে প্রচুর অবৈধ অস্ত্র আসছে। সূত্র আরো জানায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার দেশজুড়ে সমন্বিত অভিযান চলবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী তালিকাভুক্ত ২০টি জেলাসহ সীমান্তবর্তী ৩২ জেলায় অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, চলতি বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করেই পেশাদার সন্ত্রাসীরা ছোট-বড় আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করছে।

 

এসব অস্ত্রের মধ্যে সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ ও নাইন এমএম পিস্তল বেশি ঢুকছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে। পয়েন্ট টু-টু বোরের রিভলভার আসছে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে। কুমিল্লা, যশোরের বেনাপোল ও হিলি সীমান্ত হয়েও এ ধরনের অস্ত্র ঢুকছে দেশে। দেশে অবৈধ অস্ত্র আমদানির শতাধিক সিন্ডিকেট রয়েছে। অবৈধ অস্ত্রের মালিকরা একশ্রেণির সন্ত্রাসীর কাছে অস্ত্র ভাড়াও দিচ্ছে। এদিকে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের উপণ্ডমহাপরিদর্শক (ডিআইজি, অপারেশনস) মো. হায়দার আলী খান জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এটা পুলিশের রুটিন কাজ।