নওগাঁয় নানান অনিয়মে জর্জরিত শতবর্ষ পুরনো মাদ্রাসা
প্রকাশের সময় : মার্চ ১, ২০২২, ৫:০২ অপরাহ্ন /
১১০
স্টাফ রিপোর্টার->>
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় সফাপুর ইউপি সীমান্তবর্তী এলাকার বিনোদপুর দাখিল মাদ্রাসা শত বর্ষ পুরনো। মাদ্রাসাটি যেন এখন সভপতি ও সুপারের লালসার শিকার। নানা অনিয়মে জর্জরিত অবস্থায় দাড়িয়ে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। কাগজে কলমে সব ঠিক থাকলেও ব্যস্তবে তার উল্টো। নেই কোন শিক্ষার্থী, নেই কোন শিক্ষার্থীদের বসার যায়গা। সরকারি নতুর বছরের বই গুলো একটু পুরনো হলেই হয়তো বিক্রয় করা হবে। কাগজ পত্রে আসলে কি আছে সেটাও দেখাতে নানা তাল বাহানা। মাদ্রাসার বারান্দায় থাকা টিনসহ ঘরের লোহার জানালা স্থানীয় ভাঙ্গারীর দোকানে বিক্রয় করা হয়েছে বলে জানা গেছে একাধীক সূত্রে। কোন একদিন দেখা যাবে মাদ্রাসাটি ইটও বিক্রয় হয়ে যাবে। মাদ্রাসার বিল্ডিং পরিতাক্ত অবস্থায় থাকলেও রেহায় পাচ্ছে না সুপার ও সভাপতির হাত থেকে।
মাদ্রাসার গাছ কাটার প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক ইউ’পি সদস্যকে লাঞ্চিত করায় ঘনাও ঘটেছে।
এঘটনায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি ৭ জনের নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । অভিযোগকারী হলেন, বিনোদপুর গ্রামের আফের আলীর ছেলে এবং ৭ নং সফাপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউ’পি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার । অভিযোগ দায়ের করার কারনে বাদী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছেন। এমনকি নাম পরিচয়হীন পাতি নেতাদের দ্বারাও হুমকির শিকার হয়েছেন অভিযোগকারী এবং তাঁর পরিবারের ।
অভিযুক্তরা হলেন, বিনোদপুর দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি সাদ্দাম হোসেন (২০), সুপার তোফাজ্জল হোসেন (৫৫),সহকারী-সুপার আব্দুর রউফ (৪০), পিয়ন দেলোয়ার হোসেন (৪৫) ও তার ছেলে ওবাইদুল হোসেন (২০) এবং মোস্তাকিন (৪০)।
জানাগেছে, বিক্রয়কৃত বিনোদপুর দাখিল মাদ্রাসার ২টি কৃষ্ণচূড়া গাছ,৩ টি লাটুর গাছ,২টি কাঁঠাল গাছ, ৩টি আমের গাছ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার ) সকাল ১০ টার দিকে কর্তন করেছেন স্থানীয় এক গাছ ব্যবসায়ীর লোকজন।এমন সময় গাছ কাটার খবর পেয়ে অভিযোগকারী ৭ নং সফাপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউ’পি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার গাছ কাটতে বাঁধা দেয়। এসময় অভিযুক্তদের হাতে লাঞ্চিত হন তিনি। লাঞ্চিত হওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান।
সরেজমিনে গেলে বাদী আব্দুস সাত্তার জানান, গাছ কাটার সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তিনি বাঁধা দেওয়ায় অভিযুক্তরা তাকে লাঞ্চিত করেন। এর প্রতিকার চেয়ে তিনি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এঘটনার সাথে জড়িতদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
আরো জানা যায়, মাদ্রাসায় ছাত্র/ছাত্রী নেই, তবে সরকারি বই আছে, এসব বিষয় জানতে চাইলে, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ,সুপার তোফাজ্জল হোসেন,সহকারী-সুপার আব্দুর রউফ,পিয়ন দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা জানান যে, এমনিতেই বিল- বেতন নেই, তারমধ্যে করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রয়েছে। তবে এবারের ফলাফল ভালো। আর সেকারণে প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কাজ করার জন্যই গাছগুলো কাটা হচ্ছে।ইউপি সদস্যকে লাঞ্চিত করার বিষয়টির জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন তারা।
এব্যাপারে মহাদেবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান হাবিব ভোদন বলেন, ইউপি সদস্যকে লাঞ্চিত করার বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ভূক্তভোগী আব্দুস সাত্তার অভিযোগ দায়ের করলে। তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান জানান, ভর্তি চলাকালীন সময় পর্যন্ত বই রাখা যাবে, তাছাড়া জানুয়ায়ী প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বই বিতরণ করতে হবে। যদি কেউ বই বিতরণ না করে বিক্রয় করে থাকে সেটা অপারাধের সামীল।
আপনার মতামত লিখুন :