স্টাফ রিপোর্টার ->>
নওগাঁয় তাঁত বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলায় লটারীর নামে প্রকাশ্য জুয়া বন্ধ ও ডিস কেবল নেটওয়ার্ক লাইনে প্রচার বন্ধের দাবীতে গত ৮ জুন (বুধবার) সকাল ১১ টায় নওগাঁ জেলা প্রশাসক অফিস চত্বরে সর্বশ্রেণি মানুষের উপস্থিতিতে ও একই দিনে দুপুর ১ টায় শহরের মুক্তির মোড়ে ছাত্রদের সমন্বয়ে পৃথক দুটি মানববন্ধনের পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে লটারী নামে জুয়া বন্ধ করে দেবার ৫দিনের মাথায় গত ১৩ জুন পূর্বের ন্যায় প্রচার প্রচারণায় শুরু হয় লটারী নামে জুয়ার। যার পরিপেক্ষিতে আবারও মানববন্ধনে নামেন ছাত্র সমাজের পাশাপাশি নওগাঁর সর্বসাধারণ। লটারী বন্ধ না হলে কঠোর পদক্ষেপের হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
১৮ জুন (শনিবার) সকাল ১১ টায় নওগাঁ জেলা শহরের মুক্তির মোড়ে শহীদ মিনার চত্বরে সর্বসাধারণের সমন্বয়ে এ মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, খোদাদাদ খান পিটু- সভাপতি নওগাঁ এ্যাডভোকেট বার এসোসিয়েশন। আরাফাত হোসেন হিমেল, সম্পাদক ও প্রকাশক ভয়েজ অফ নওগাঁ। রামিম দেওয়ান, সাবেক সদস্য সচিব জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন।তাসলীমা ফেরদৌস – আড্ডায় কফির সত্বাধিকারী এবং বেলা শেষের বৃদ্ধাআশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা। ইসমাইল হোসেন -সভাপতি বাউল ঐক্যপরিশোধ।আরাফাত রহমান হিমেল, সভাপতি স্বপ্ন সারথি পাবলিক লাইব্রেরি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যারা এ জুয়া চালাচ্ছে তারা কি শক্তির জোড়ে এ অপকর্ম করছে তা জানতে চায় নওগাঁর জনসাধারণ। তাছাড়া লটারী নামে জুয়া বন্ধ না করলে কঠিন পদক্ষেপের মাধ্যমে এ জুয়া উচ্ছেদ করার হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
জানা যায়, নওগাঁ জেলা সদরের পার নওগাঁ (ফায়ার সার্ভিস এর পেছনে) মাসব্যাপী তাঁত বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলায় লটারীর নামে প্রকাশ্য জুয়া চলছে গত ২৪ দিন ধরে। বর্তমানে সিএনজি অটো রিকশা, ৮-১০ টি পালসার সহ নানান ব্রান্ডের মোটর সাইকেল, সোনার গহনা সহ নানান লোভনীয় পুরষ্কারের সমাহারে নওগাঁয় ডিস কেবল নেটওয়ার্কে সরাসরি লটারী খেলার ড্রঃ প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণকে টিকেট কাটতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রতি গাড়িতে ১০০০-৫০০০ টিকেট সহ সর্বমোট ৩৫০ টি ভ্রাম্যমান গাড়িতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার আনাচে কানাচে টিকিট বিক্রয় করে লক্ষ লক্ষ টাকা উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সারাদিনের উপার্জিত প্রায় সকটুকু টাকা দিয়ে লটারির টিকেট কিনে ফাঁকা পকেটে বাড়ি ফিরছের জেলার এক শ্রেণির মানুষ। দিন শেষে লটারীতে বিজয়ী না হতে পেরে নতুন স্বপ্নে আগামী দিনে পুরষ্কার পাবার আশায় উপার্জিত টাকা দিয়ে পুনরায় টিকেট কিনছেন মানুষ।
নওগাঁ জেলা সদরের রিকশা চালক মোরশেদ হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, গতকাল ৪৩৫ টাকা ইনকাম করেছি যার মধ্যে টিকেট কিনেছি ১৮ টি, ৩৬০ টাকার। আজ ১০ টি কাটবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, মোটর সাইকেল এর আশায় আমি প্রতিদিন ৫-৭ টা করে টিকেট কাটি কিন্তু একদিনও পাইনী। তাছাড়া আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা প্রতিদিন টিকেট ক্রয় করে।
বর্তমান বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য দিন দিন বেড়েই চলেছে, দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে ইতমধ্যে সরকার নানান পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। এমন সময়ে এই লটারী নামে জুয়াতে মানুষ প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা ঢালছে, যার ফলে নওগাঁ জেলা কিছুদিনের মধ্যেই ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখে পরবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
আপনার মতামত লিখুন :