নীলফামারী প্রতিনিধি ->>
“নীলফামারীতে ধর্ষণ মামলা মামলা থেকে বাঁচার প্রয়াস নিয়ে কাল্পনীক ঘটনার অবতারণা করে বিজ্ঞ আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেছেন নীল ছবি নির্মাতা কমলেন্দু রায়” এমনটাই দাবী করছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কলেজ ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই ছাত্রীর সাথে অবৈধ শারিরীক সম্পর্কে জড়িয়ে গোপনে তা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে সেটি ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীকে ক্রমান্বয়ে ধর্ষণ করে আসছিলেন জেলার জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইটকাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কমলেন্দু রায়।
লম্পট শিক্ষকের হাত থেকে নিজের মেয়েকে বাঁচাতে আইনের দ্বারস্ত হয়ে সুবিচার পাওয়ার কামনায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধীত/০৩) এর ৯(১) এবং ২০১৮ সালের পর্নোগ্রাফী আইনে ওই ধর্ষক ও নীল ছবি নির্মাতা সহকারী শিক্ষক কমলেন্দুর বিরুদ্ধ বিজ্ঞ আদালতে মামলা করে ভুক্তভোগী পরিবারটি।আর এ মামলার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাবার প্রয়াস নিয়ে সৃষ্ট ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ওই কলেজ ছাত্রীকে স্বীয় স্ত্রী দাবী করে কলেজ ছাত্রীসহ তার পরিবারের আরো ৪জনকে আসামীর শ্রেণী ভুক্ত করে বিজ্ঞ আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করে ধুরন্ধর লম্পট শিক্ষক কমলেন্দু রায়, (যার মামলা নম্বর পি-১৩৮ জল:)।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর বাবা দিলীপ রায়ের সাথে, তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, “আমার মেয়ে দক্ষিণ পাইটকাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন কালে লম্পট সহকারী শিক্ষক বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে আমার নাবালিকা মেয়েকে তার (কমলেন্দুর) প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে আমার মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে।সে তার মোবাইলে গোপনে আমার মেয়ের সাথে তার অভ্যন্তরিন ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আমার মেয়েকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনবরত ধর্ষণ করেছে এবং জোর করে বিভিন্ন কাগজপত্রে আমার মেয়ের স্বাক্ষর নিয়েছে। আমি ওই লম্পট শিক্ষকের বিচার মেয়ে তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একটি ধর্ষণ মামলা করি।
ওই মামলার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাবার প্রয়াসে সৃষ্ট ভুয়া কাগজপত্রের দ্বারা আমার মেয়েকে তার স্ত্রী দাবী করে কাল্পনিক ঘটনার অবতারণা করে বিজ্ঞ আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করে। যা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট”
ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর মামা শ্রী ডালিম চন্দ্র রায় বলেন, “লম্পট চরিত্রের সহকারী শিক্ষক কমলেন্দু রায়, তার মামলার আরজিতে উল্লেখ করেছেন যে, ‘আমার ভাগ্নীর (ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী) সাথে তার (কমলেন্দুর) বিয়ে হয়েছে এবং তারা সংসারও করেছে’ এটি সম্পুর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কারণ ওই লম্পট শিক্ষকের বর্তমান বয়স প্রায় ৪৫ বছর, তার স্ত্রী রয়েছে এবং আমার ভাগ্নীর (ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী)বয়সের চেয়ে বড় ওই লম্পট শিক্ষকের একটি মেয়ে ও একটি ছেলে আছে”।
ভূক্তভোগী কলেজ ছাত্রী জানায়, “সহকারী শিক্ষক কমলেন্দু রায় আমাকে তার প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে ধর্ষণ করে এবং সেটি তাহার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গোপনে ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তিতে ওই ভিডিও
ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আমাকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ করেছে। এমনকি ওই ভিডিও এর ভয় দেখিয়ে কমলেন্দু বিভিন্ন কাগজে জোর করে আমার স্বাক্ষর নিয়েছে। আমি জানিনা সেই কাগজগুলো কিসের কাগজ।এখণ শুনতেছি সে আমাকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবী করে আমার পিতা মাতাসহ মামার বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা দিয়েছে।আদৌ সে আমার হিন্দু সাস্ত্র অনুযায়ী কোথাও কোন ভাবে বিয়ে করে
নাই”।
এ বিষয়ে ধর্মপাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তাহের এর সাথে কথা হলে, তিনি সাংবাদিকদের জানান, “যদি সহকারী শিক্ষক কমলেন্দুর সাথে ওই ভূক্তভোগী মেয়েটির বিয়ে হয়ে থাকে, তাহলে এক কান্ড করার কি আছে? আমি সহকারী শিক্ষক কমলেন্দুর সাথে কথা বলেছি, তিনি আমাকে এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি।আমার জানামতে সহকারী শিক্ষক বিবাহিত তার বড় বড় ছেলে ও মেয়ে আছে এবং ওই ভুক্তভোগী মেয়েটির সাথে সহকারী শিক্ষক কমলেন্দুর কোন সংসার করেনি”।
এদিকে, অবশেষে ৩ লক্ষ টাকা জড়িমানা গুনছেন নীলছবি নির্মাতা সহকারী শিক্ষক কমলেন্দু রায়, জানিয়েছেন স্থানীয একাধিক সূত্র। এ নিয়ে থাকছে বিশেষ প্রতিবেদন। চোখ রাখুন অনুসন্ধানী ৩য় পর্বে৷
আপনার মতামত লিখুন :