ArabicBengaliEnglishHindi

পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকেরা পাচ্ছে না মেয়াদপূর্তি বীমার টাকা


প্রকাশের সময় : মার্চ ৭, ২০২২, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন / ১৬৫
পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকেরা পাচ্ছে না মেয়াদপূর্তি বীমার টাকা
এমরান হোসেন, জামালপুর প্রতিনিধি ->>
ভবিষ্যত আর্থিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি পেয়ে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডে একক ও জীবন বীমা পলিসি করেন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। বীমা পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ৩/৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বীমা দাবির টাকা এখনো পাননি গ্রাহকেরা। বীমা দাবির টাকা পেতে প্রতিষ্ঠানটিতে দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েও লাভ হচ্ছে না। বীমাকৃত অর্থ পরিশোধে নানা তালবাহানা করছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী কর্তৃপক্ষ। প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাহক এখন চরম অনিশ্চয়তায় দিশেহারা হয়ে পড়ছে।
আওনা ইউনিয়নের কোলপাল গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, মেয়াদ শেষে মুনাফাসহ দ্বিগুণ টাকা পাওয়া যাবে- বীমা করার সময় এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও মুনাফা তো দূরের কথা, এখন আসল টাকাও ফেরত দেয়া হচ্ছে না। কোম্পানিতে বীমা দাবির টাকা চাইতে গেলে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পেশায় আমি একজন ইলেকট্রিশিয়ান। কারেন্টের কাজ করতে গিয়ে কয়েক মাস যাবৎ পঙ্গু হয়ে চিকিৎসাধীন। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারতেছিনা। এই মুহুর্তে টাকাটা আমার বিশেষ দরকার। কিন্তু মাস গড়িয়ে একে একে তিন বছর চলে গেলেও বীমা দাবির টাকা দিচ্ছে না।
ভুক্তভোগী আরেক বীমা গ্রাহক মাহমুদা খানম  বলেন, বীমার মেয়াদ শেষ হয়েছে তিন বছর আগে। এখনো টাকা পেলাম না। অনেক আশা নিয়ে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুইরেন্সে বীমা করেছিলাম। বীমা করার সময় কোম্পানির লোক ভালো ভালো কথা বলেছিল। এখন বীমার টাকা চাইতে গেলে কেউ কোনো কথা বলতে চায় না। কোথায় গেলে বীমার টাকা পাওয়া যাবে তা বুঝতে পারছি না।
মাঠ পর্যায়ে এবিপি পদে কর্মরত উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির অধীনে সরিষাবাড়ী ও কাজীপুর উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রাহক আমার আওতায় বীমা করেছিলেন। কিন্তু বীমার মেয়াদপূর্তির চার বৎসর অতিবাহিত হলেও অদ্যবধি কোন গ্রাহক বীমার টাকা পায় নাই। বীমার টাকা ফেরত না পাওয়ায় আমাকে অনেক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এজন্য আমি অনেক বিপদের মধ্যে আছি। আমি পেশায় একজন শিক্ষক। লজ্জা শরমে আমি বাহিরে যেতে পারছি না। তাই আমি মেয়াদপূর্তি বীমার টাকা ফেরত পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে জামালপুর জেলা জোনে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড অফিসে প্রতিদিন শত শত মানুষ বীমা পলিসির টাকা নিতে আসেন। অনেকেই অফিসে এসে হিসাবরক্ষণ ছাড়া দায়িত্বরত কাউকে না পেয়ে হিসাব রক্ষণ কে গ্রাহকেরা প্রতিনিয়ত বকাঝকা করে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। অফিসের কর্মকর্তারাও নিয়মিত অফিস করেন না।
জামালপুরস্হ পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের জোন ইনচার্জ মেরিনা বেগমের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি  বলেন, আমি গত সপ্তাহেও হেড অফিসে গিয়েছিলাম কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে এব্যাপারে কথা বলেছি। তারা বলেছেন নতুন করে বীমা গ্রাহক সংগ্রহ করে ব্যবসা চালু করতে হবে। তারা আরও বলেছেন বীমার টাকা দিয়ে জমি কেনা হয়েছে। সুতরাং জমি বিক্রি করে গ্রাহকদের টাকা দেওয়া হবে। কবে নাগাদ দেওয়া হবে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গ্রাহকদের টাকা কবে দেওয়া হবে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য তার কাছে নেই।