ArabicBengaliEnglishHindi

পানির সংকটে ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী


প্রকাশের সময় : জুলাই ১১, ২০২৩, ৭:০৭ অপরাহ্ন / ২৯৯
পানির সংকটে ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী

বিশেষ প্রতিনিধি ->>
রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। রাজধানী ঢাকায় যে পরিমাণ পানির চাহিদা রয়েছে তার থেকে অনেক বেশি পানি উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে ওয়াসার। কিন্তু তার পরেও দিন দিন পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। ওয়াসা বলছে, আগের তুলনায় উৎপাদন কিছুটা কমেছে এবং প্রচণ্ড গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে এ সংকট তৈরি হচ্ছে। ওয়াসার দৈনিক পানির উৎপাদন সক্ষমতা ২৬০ কোটি লিটার। ঢাকা শহরে ২১০ থেকে ২৪৫ কোটি লিটার পর্যন্ত চাহিদা থাকে। প্রতিদিন পানি উৎপাদিত হয় ১০ শতাংশেরও বেশি।

বিভিন্ন এলাকায় পানির পাইপ এবং পাম্প নষ্ট থাকায় এই বাড়তি পানি খুব বেশি কাজে আসে না স্থানীয়দের। ঢাকা ওয়াসা জানায়, প্রচণ্ড গরমের কারণে পানির চাহিদা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে। বর্তমানে পানির চাহিদা বেড়ে দৈনিক ৩০০ লিটার হয়েছে। যা অন্যান্য সময় বা শীতকালে দৈনিক পানির চাহিদা থাকে ২১০ কোটি লিটার। তারা বলছেন লোডশেডিংয়ের কারণে পানির পাম্প ঠিকমতো তারা চালাতে পারছে না। লোডশেডিংয়ের কারণে পানি উৎপাদনেও চাপ বেড়েছে। ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করে। তবে মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কিংবা কারিগরি ত্রুটির কারণে পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। তখন ওয়াটার ট্যাঙ্ক দিয়ে পানি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু সরবরাহকালে অপচয় এবং পাম্প নষ্ট হওয়ার কারণে মাঝেমধ্যেই এলাকাভিত্তিক কিছু সমস্যা তৈরি হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি সংকটের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে জীবন-জীবিকা। পানির যথাযথ গুরুত্ব অনুধাবন করে পানি সমস্যা সমাধানে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরী বলে মনে করেন তারা। রাজধানীর জুরাইন, বাসাবো, বাড্ডা, মহাখালীসহ বেশ কিছু এলাকায় মাঝেমধ্যেই পানির সংকট দেখা দেয়। বিভিন্ন এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার উপযোগী পানিরও সংকট রয়েছে। দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত পানির কারণে রাজধানীবাসীর রান্নাবান্না, গোসল আর নিত্যকার কাজ সারতে দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। ঢাকা ওয়াসার উৎপাদিত পানির প্রায় ৬৭ শতাংশ আসে ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে গভীর নলকূপ দিয়ে টেনে এই পানি তোলা হয়। সংস্থাটির তথ্য বলছে, এখন ঢাকা ওয়াসার ১ হাজার ৬১টি পাম্প (স্ট্যান্ডবাইসহ) রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলে ওয়াসা নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে পাম্পগুলো চালায়। তবে জেনারেটর দিয়ে সব পাম্প চালানোর মতো সক্ষমতা ওয়াসার নেই। অনেক পাম্প বন্ধ রাখতে হয়। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার ৫টি পানি শোধনাগার রয়েছে। তবে ৪টি শোধনাগার থেকে পানি পাঁচ্ছে সংস্থাটি।

চলতি বছরে উপরি তলের পানির উৎপাদন ৭০ শতাংশে উন্নীত করার কথা থাকলেও সেই লক্ষ্য পূরণ এখনও করতে পারেনি ঢাকা ওয়াসা। বর্তমানে উপরি তলের পানি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩৫ শতাংশ। আর বাকি ৬৫ শতাংশ পানি তারা পাঁচ্ছে ভূগর্ভ থেকে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা দেখা যায়, গত কয়েক দিন ধরে ঐসব এলাকায় পানির সংকটে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে মানুষ। রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, ঢাকা ওয়াসার লাইনে পানি না পাওয়া গেলে একমাত্র বিকল্প সংস্থাটির কাছ থেকে পানি কেনা, যা গাড়ির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। দুই, সাড়ে তিন, পাঁচ ও ছয় হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার গাড়ি রয়েছে। দাম ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। কিন্তু চাহিদার অর্ধেকও সরবরাহ করতে পারছে না সংস্থাটি।