চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ->>
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালাতে গিয়ে সিএনজি অটোরিকশার সঙ্গে বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সিএনজি অটোরিকশা চালক নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় অটোরিকশার আরও তিন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। বুধবার সকাল ১১টায় সীতাকুণ্ডের পন্থিছিলা বটতল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত চালকের নাম মো. কোরবান আলী (৪০)। তিনি সীতাকুণ্ড পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইয়াকুবনগর গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে।
দুর্ঘটনায় আহতদের প্রথমে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
এদিকে, ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা হাইওয়ে পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এ ঘটনার জন্য হাইওয়ে পুলিশকে দুষছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তারা বলছেন, সিএনজি অটোরিকশাটিকে হাইওয়ে পুলিশ ধাওয়া করলে চালক ভয়ে উল্টো দিকে মোড় নিতে গিয়ে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে চালকের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হাইওয়ে পুলিশ মাসিক মাসোহারার ভিত্তিতে দালাল চক্রের মাধ্যমে সিএনজি অটোরিকশা মহাসড়কে চালানোর বৈধতা দিয়ে দেয়। যেসব সিএনজি অটোরিকশা মাসোহারার আওতায় নেই সেসব সিএনজি অটোরিকশাকে দালাল চক্র দিয়ে আটক করে। এভাবে প্রতিনিয়ত মাসিক ভিত্তিতে চলছে হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সিএনজি অটোরিকশা চালকরা।
তারা আরও বলেন, মহাসড়কে যদি সিএনজি অটোরিকশা নিষিদ্ধই হয় তাহলে দালালদের গাড়ি কীভাবে টোকেন পায়? আমরা যারা মাসোয়ারা দিতে পারি না তাদের গাড়িই হাইওয়ে পুলিশ আটক করে, মামলা দেয়। ছাড়িয়ে আনতে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নেয়।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম বলেন, অটোরিকশাটি ঢাকার দিকে যাওয়ার সময় হাইওয়ে পুলিশ থামার জন্য সংকেত দিলে চালক দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে একটি বাসের নিচে পড়ে যায়। এতে দুর্ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে একই সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গেট এলাকায় একই মুখী দুটি যাত্রীবাহী লোকাল বাসের মধ্যে সংঘর্ষ হলে ৬ যাত্রী আহত হন।
পৃথক দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন- মিরসরাই ছোট কমলদহের খতিজা আক্তার (৩০), সীতাকুণ্ডের পন্থিছিলার ফেরদৌসী আক্তার (৪০), পন্থিছিলার রৌশনী (২০), একই এলাকার নুরুল ইসলাম (৩২), কুমিরার মো. মাসুদ (২১), মগপুকুরের রেজাউল করিম (২১), সন্দ্বীপের দেলোয়ার হোসেন (৫০), সীতাকুণ্ড লাঠিয়াল পাড়ার মো. সিদ্দিকুর রহমান (৬০), সন্দ্বীপের আবু তাহের (৬০), কুমিল্লা জেলার সবুজ (১৭) ও মিরসরাই ছোটকমলদহের সাফিক (৫)।
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১২ জনকে সীতাকুণ্ড হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা কোরবান আলী নামের একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদাবাজিরদায়ে কুমিরা ও জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার ৯ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছিলো। এর আগে গত ১২ মে চাঁদাবাজির দৃশ্য ধারণ করলে দুই সাংবাদিককে হেনস্তা করেন কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা। পরে অভিযোগের সত্যতা মেললে কুমিল্লা রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করেন।
আপনার মতামত লিখুন :