নিজস্ব প্রতিবেদক ->>
বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ভেবেছেন আপনার কর্মীরা নির্দ্বিধায় এসব অপকর্ম করে যাবে আর বিএনপি চুপ করে থাকবে। এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।
প্রতিটি আঘাতের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা ও কুমিল্লায় বিএনপির নেতাদের ওপর হামলার পরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বরকত উল্লাহ বুলুর রক্ত কি জাতীয়তাবাদী শক্তি মেনে নেবে? আজকে তাবিথ আউয়ালের রক্ত কি মেনে নেবে? আজকে সেলিমা রহমানের উপর উপর্যুপরি যে আঘাত এটা কি মেনে নেবে? এটা কোনো দিন মেনে নেবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায়ের জন্য লড়াই করছিলাম। কিন্তু আমরা গান্ধীবাদে বিশ্বাস করি না, আমরাও প্রতিরোধ করতে জানি।
রিজভী আরও বলেন, ‘আমাদের আজকে অনেক রক্ত ঝরেছে। ১৪ বছরে ক্রমাগত অনেক প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন। অনেককেই পঙ্গু করেছেন। এই ২২ আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত আপনারা বহু নেতাকর্মী যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের অনেক নেতাকর্মীকে অন্ধ করেছে আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ছিল বনানীতে। সেই কর্মসূচিও আওয়ামী লীগের সহ্য হয়নি। সেখানেও বর্বর হামলা চালিয়েছে তারা। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য যিনি সরকার চালিয়েছেন- সেলিমা রহমান, তিনিও হামলা থেকে রেহাই পাননি। তাবিথ আউয়াল, শামা ওবায়েদসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। কর্মসূচি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের পেটোয়াবাহিনী ইট পাটকেল মারা শুরু করে। তাবিথ আউয়াল এক পর্যায়ে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে; সেখানে ঢুকেও তার ওপর হামলা করে। সে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে তার পেটুয়া বাহিনী দিয়ে। গত ১৪ বছরে পেলে পুশে একটা নেকড়ে বাহিনী তৈরি করেছে। তাদেরকে লেলিয়ে দিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী মানুষদের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার এত রক্ত পান করেও তৃষ্ণা মিটছে না। প্রতিদিন যেন তার আরও রক্ত চাই। বিরোধী দলের আরো রক্ত চাই। আরো রক্ত পান করতে পারলে যেন তিনি তৃপ্তি পান। এই ধরনের একটা মনোবৃত্তি নিয়ে তিনি কাজ করছেন।
রিজভী আরও বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার (প্রধানমন্ত্রী) দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এই যে তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন; যাওয়ার আগে কাকে কি দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন? কাকে কিভাবে মারতে হবে। বিএনপির কোন কর্মসূচিতে কিভাবে মারা হবে বলা মুশকিল। এ ধরনের দিকনির্দেশনা হয়তো দিয়ে গেছেন অনেকে তাই বলছে। আমরা সেটার প্রমাণ এবং বহিঃপ্রকাশ অক্ষরে অক্ষরে দেখতে পেলাম। এই ধরনের বর্বর হামলা যারা করে গণতান্ত্রিকামী নিরস্ত্র মানুষের ওপর; তারা জনগণের শত্রু।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা গত ১৪ বছরে তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভেতর থেকে মানুষের আত্মাকে মেরে ফেলে সেখানে শয়তানের আত্মা, হিংস্রতার আত্মাকে ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাই এদের কোনো বিবেক নেই, মানবতা নেই। শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতাকে রক্ষা করার জন্য একদিকে যেমন পুলিশ সাজিয়েছে, তেমনি ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে সাজিয়েছে পাহারাদার হিসেবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু কুমিল্লা থেকে আসার সময় তার ওপর আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী হামলা করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘তার গোটা শরীর থেঁতলে দিয়েছে। তার মাথা পুরোটাই ব্যান্ডেজ করা। তার উপর দিয়েও রক্ত চুয়ে চুয়ে পড়ছে।
আপনার মতামত লিখুন :