ArabicBengaliEnglishHindi

বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্সের পাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ


প্রকাশের সময় : জুন ১২, ২০২২, ৮:২৬ অপরাহ্ন / ১০১
বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্সের পাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ->>
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্স পাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপের সৃষ্টি হয়েছে ভয়ানক নোংরা পরিবেশ। ময়লা আবর্জনার কারণে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ এমন কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সচেতন মহল।

সরেজমিনের পরিদর্শন করে জানা যায়, বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্সের সামনের সিইউএফএল সড়কের পাশে সৃষ্টি হয়েছে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। মহাল খান বাজারের সকল ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে সৃষ্টি হয়েছে নোংরার স্তূপ। বিভিন্ন প্রকার বর্জ্যের দুর্গন্ধে কারণে পথযাত্রীরা নাক চেপে চলাফেরা করতে দেখা যায়।

পথযাত্রী সোলাইমান জানান, আমি একজন গার্মেন্টস কর্মী। প্রতিদিন এই বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্সের সামনে সিইউএফএল সড়কের দিয়ে চলাচল করতে হয়। দুর্গন্ধের কারণে আমাদের চলাচলের সমস্যা হচ্ছে এমনি স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও রয়েছে।

শেখ আবদুল্লাহ নামে এক মানবিক ব্যক্তি জানান, বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্স আমাদের বীর মুক্তিযুদ্ধের অহংকার। আমরা জাতীয় সকল দিবসসহ বিভিন্ন সময় বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্সে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই। বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্স সবুজের ঘেরা একটি নন্দিত স্থান। এমন একটা স্থানের সামনে ময়লা আবর্জনা স্তূপ খুব দুঃখ জনক।

ইতিহাসের তথ্য মতে, ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর নির্বিচারে গণহত্যার অন্যতম স্থান হলো বন্দর বধ্যভূমি। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সূত্রে জান যায়, উপজেলার বন্দর গ্রামের বধ্যভূমিতে ১৯৭১ সালের ২০ মে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ১৫৬ জন মানুষকে অমানুষিক নির্যাতনের পর গুলি করে মারা হয়। এতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করে স্থানীয় রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী। এসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতি রক্ষার্থে বধ্যভূমির ৫০ শতক সরকারি খাস জমির উপর আকর্ষণীয় কমপ্লেক্স ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

২০১০ সালের ১৮ নভেম্বর এ নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু।
২০১১-১২ সালে সংসদ সদস্য মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এমপির উদ্যোগে দেড় কোটি টাকার সরকারি অর্থায়নে বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়। সেই বধ্যভূমির পাশে সেন্টারের ব্যবসায়ীরা এবং বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলে ভাগাড় সৃষ্টি করা হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়দের মাঝে।

জনসচেতনতার অভাব আর দায়িত্ববানদের অবহেলা ও কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনায় এই বধ্যভূমির চারপাশের সৌন্দর্য্য ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

দক্ষিণ বন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী চৌধুরী বলেন, বীর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত হয়েছে বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্স। বধ্যভূমি সামনের ময়লা আবর্জনা স্তূপ আমাদের জন্য খুবই দুঃখ জনক।আমি উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে জানানো হলে ওনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্স ময়লা আবর্জনা স্তূপ সম্পর্কে জানতে চাইলে বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান নোয়াব আলী জানান, আমরা পুরো সেন্টার পরিষ্কার করার জন্য একটা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বধ্যভূমির পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলা ব্যক্তিদের খোঁজ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং চারপাশের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হবে।