নিজস্ব প্রতিবেদক ->>
বিদেশিরাও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে নিশিরাতের ভোটের সরকার বলতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে শীতবস্ত্র বিতরণ ও দোয়া মাহফিলে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে করে রিজভী বলেন, ‘আপনি মনে করছেন, যা বলবেন তা সবাই বিশ্বাস করবে। এখন বিদেশিরাও বলতে শুরু করেছে আপনি নিশিরাতের ভোটের প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি, জাপানের রাষ্ট্রদূত বললো, এখানে (বাংলাদেশে) রাতের বেলা ভোট হয়। এটা আগে তো কোথাও শুনেনি। আপনার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বললেন জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলে এর কড়া প্রতিবাদ করেছেন।
কিন্তু পরের দিন জাপানের রাষ্ট্রদূত বললেন ওই প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কোনো দেখাই হয়নি। আপনি, আপনার মন্ত্রী, নেতা এবং আপনার ছেলেও মিথ্যা কথা বলেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরীন খানের পরিচালনা এতে অংশ নেন সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদা বেগম হীরাসহ মহিলা দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। প্রধানমন্ত্রীর এক বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দুইদিন আগে বললেন মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে আপনি কোনো বৈষম্য করেননি। এর চাইতে ডাহা মিথ্যা কী হতে পারে।
যারা বীরমুক্তিযোদ্ধা বিএনপিকে সমর্থন করেন, তাদের ভাতা কেটেছেন আপনি প্রধানমন্ত্রী। যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কলকাতায় গিয়ে ফূর্তি করেছেন, এখন আপনার দল করে। এ কারণে তাদের অনেককেই মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট দিয়েছেন। একটা প্রশ্ন বিচারপতি (অব.) মানিক কোন সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, তিনি সার্টিফিকেট পান কী করে? রিজভী বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। আপনি পুলিশ দিয়ে গতকাল (বুধবার) গুলি করেছেন শেরপুরে। পাবনায় ও ফেনীতে গুলি করেছেন। সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন, গ্রেপ্তার করাচ্ছেন। রাজশাহী থেকে বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফাকে গতকাল (বুধবার) গ্রেপ্তার করেছেন। কেন? আপনার যদি এত জনগণ থাকে, তাহলে ভয় কিসের আপনার? স্পষ্ট করে বলছি, আগামী ১০ ডিসেম্বর আমরা স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব, বিপুল জনসমাগম হবে।
তিনি বলেন, মহিলা দলের নেতাকর্মীরা সরকারের অন্যায়, অবিচার দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তারা রাজপথ থেকে কখনও সরে যায়নি। রাজপথে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন, কারাগারে গেছেন, পুলিশি নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে। এখনও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ কারাগারে বন্দি। এদেশের নারী সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী জাতীয়তাবাদী মহিলা দল যেভাবে রাজপথে নেমে এসেছে, শেখ হাসিনা ও তার সরকার আর বেশিদিন ক্ষমতায় লাস্টিং করার কথা না। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনার ক্ষমতায় থাকার বৈধতা নেই।
আপনি মানসিকভাবে দুর্বল, জনগণ আপনার কাছ থেকে সরে গেছে। ভোটাররা নেই, ভোটের সমর্থন নেই। বন্দুক দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় চেতনায় নিয়ে গিয়ে তাদের দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করছেন। একদিন এর বিচার হবেই।
আপনার মতামত লিখুন :