ArabicBengaliEnglishHindi

ব্যাটারিচালিত রিকশা বিদ্যুতের বড় অংশ গিলে খাচ্ছে


প্রকাশের সময় : জুলাই ২১, ২০২২, ৯:৪২ অপরাহ্ন / ৮৬
ব্যাটারিচালিত রিকশা বিদ্যুতের বড় অংশ গিলে খাচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ->>
দেশের বিদ্যুতের বড় একটি অংশ গিলে খাচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। দীর্ঘদিন ধরে এই রিকশা বন্ধের কথা বলা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। চালকদের দাবি, এলাকার প্রভাবশালীদের সহায়তায় টাকার বিনিময়ে কাঙ্ক্ষিত কার্ড পেলেই চালানো যায় এ যান। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, ওপর মহলের কিছু কর্মকর্তার কারণে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ হচ্ছে না।

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর ও দুয়ারীপাড়া এলাকা। সরকারদলীয় এক অঙ্গসংগঠনের নেতার ১ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে এই এলাকায়। সরকারি খালের পাশে গ্যারেজ করে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে প্রতিদিন চার্জ করা হচ্ছে এসব রিকশা। শুধু রূপনগর ও দুয়ারীপাড়ায় নয়, বৃহত্তর মিরপুর এলাকার অলি-গলিতে এভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা।

 

মসজিদ নির্মাণ কাজে আর্থিক সাহায্যের আবেদন

 

শুধু মেইন রোডে চলবে না এমন চুক্তিতেই এগুলো দেখেও দেখছে না ট্রাফিক পুলিশ। মিরপুর ছাড়াও উত্তরা, ধানমন্ডি, খিলক্ষেত, মুগদা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী, আদাবর, চটবাড়ি বেড়িবাঁধ, কামরাঙ্গীরচর ও ডেমরায় এসবের চলাচল বেশি দেখা যায়। যাত্রাবাড়ী, গোড়ান, খিলক্ষেত, মান্ডা, সায়েদাবাদ, সবুজবাগ, খিলগাঁও, চিটাগাং রোড, শনির আখড়ায় রাস্তার পাশেই কয়েক হাজার গ্যারেজ থেকে অবৈধ বৈদ্যুতিক লাইন থেকে এসব ইলেকট্রিক রিকশার ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হচ্ছে প্রকাশ্যেই। শুধু রাজধানী ও এর আশপাশেই এ ধরনের ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইকের সংখ্যা কমপক্ষে ৩ লাখ। অবশ্য ঢাকায় কিছুটা আড়ালে-আবডালে চললেও সারা দেশে জেলা, উপজেলা ও গ্রামগঞ্জে এখন প্রধান বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ইলেকট্রিক রিকশা ও ইজিবাইক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরের ক্যানসাররূপী এই রিকশা বন্ধই একমাত্র সমাধান নয়। সারাদেশে শুধু ব্যাটারিচালিত রিকশা আছে ৪ থেকে ৫ লাখ। ঢাকায় আছে প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটিতেই রয়েছে ৭৫ ভাগ।

পরিসংখ্যান বলছে, একটি রিকশা প্রতিদিন চার্জ বাবদ খরচ করছে পাঁচ ইউনিট বিদ্যুৎ; যা মাসে দাঁড়ায় ১৫০ ইউনিটে। এই বিদ্যুৎ দিয়ে এক মাস চলতে পারত একটি ছোট পরিবার।

দেশে বিদ্যুতের এই ঘাটতির দিনেও এসব যান নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই কারোরই। রাজধানী মুগদার মান্ডা এলাকার নিয়ন্ত্রণকারী আলাউদ্দিনকে এক হাজার থেকে ১৫শ’ টাকা দিলেই চালোনো যায় অবৈধ এই যানটি।

 

মসজিদ নির্মাণ কাজে আর্থিক সাহায্যের আবেদন

 

এই জনপ্রতিনিধি বলছেন, অপশক্তির বাধার মুখে বার বার চেষ্টা করেও বন্ধ করা যায়নি ব্যাটারিচালিত রিকশা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল আলম শামীম বলেন, আমরা বার বার এটা বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অনেক কিছু নিয়ে আমরা ব্যর্থ হই। কিছু কর্মকর্তা এগুলোর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। অবৈধ এই রিকশা উচ্ছেদের জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ডিজিটালাইজেশনের যুগে কোনো সুবিধা বাদ না দিয়ে সমন্বয় করে এগিয়ে যেতে হবে।

বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. জিয়াউর রহমান খান বলেন, বিদ্যুতের খরচ শুধু রিকশায় হচ্ছে না। এই রিকশাগুলো কিন্তু চার্জারের মাধ্যমে চার্জ হচ্ছে। চার্জারের ইফিসিয়েন্সি একটা বিশাল ব্যাপার। এটার ডিজাইন ঠিক করে উচিত। এখন এটা মেইনস্ট্রিমে চলে আসছে। এখন এটাকে নিষিদ্ধ করার কোনো উপায় দেখি না। এটার গ্রহণযোগ্যতা সমাজে এত বেশি হয়ে গেছে, কাজেই এটাকে সহজে নিষিদ্ধ করা যাবে না এর বিকল্প ব্যবস্থা না করে।

শুধু বিদ্যুতই না, দুর্ঘটনা বৃদ্ধি ও যানজট তৈরি করছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। তাই দ্রুত এসব যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণের দাবি সচেতন মহলের।