এস এম জীবন ->>
বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অসাধু চক্রের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। চক্রের সদস্যরা নানা কৌশলে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
শিক্ষা অধিদপ্তরের ওই চক্রকে ঘুষ না দিয়ে সহায়তা দুলর্ভ। বরং ঘুষ আদায়ে নানা অজুহাতে শিক্ষকদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হচ্ছে। ওই চক্রের কারণে যোগ্যতার ভিত্তি থাকলেও অনেক শিক্ষকের এমপিওভুক্তির আবেদন বাতিল হয়ে যাচ্ছে। মূলত এমপিওভুক্তির জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাউশির সংশ্লিষ্ট ডেস্ক অফিসারদের নিয়ে ওই সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক এবং মাউশি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মাউশিতে শিক্ষকদের নাম সংশোধন, পদবি সংশোধন, স্কুল-কলেজের বিভিন্ন অভিযোগ নিষ্পত্তি, বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বিভিন্ন কাজ হয়ে থাকে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে টাকা ছাড়া মাউশিতে শিক্ষকদের কোনো কাজই হয় না। আর মাউশির শীর্ষ কর্মকর্তারা শিক্ষকদের এমন দুরাবস্থার মধ্যেও উদাসীন। গত বছরের নভেম্বরে ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নিয়োগ পাওয়া ৭৭০ জন ডিগ্রি পর্যায়ের তৃতীয় শিক্ষকের তালিকা মাউশি প্রকাশ করে।
কিন্তু দেখা যায় তালিকায় যোগ্য প্রার্থীর নামও বাদ দেয়া হয়েছে। আবার অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদেরও তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে মাউশি সংশ্লিষ্ট চক্রের সদস্যদের অজুহাত, আবেদন না পাওয়ায় অনেকের নাম এমপিওভুক্ততে যুক্ত করা যায়নি।
সূত্র জানায়, এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নিয়ম মেনে আবেদন করলেও তালিকায় নাম উঠাতে তাদেরকে টাকার প্রস্তাব দেয়া হয়। আর যারা টাকা দিয়েছে তাদের নামই তালিকায় এসেছে। আর টাকা দেয়নি তারা এমপিওভুক্ত হতে পারেনি। মাউশির তালিকায় নাম রাখা নিশ্চিত করতে মাউশির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে শিক্ষকদের টাকা দিতে হয়েছে।
আর তালিকা থেকে বাদ পড়া শিক্ষকদের কাউকে বলা হয়েছে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে। আর কাউকে বলা হয়, আপনার কাগজপত্র ঠিক নেই। কাউকে বলা হয়, আপনার নিয়োগ প্রক্রিয়া মতো না হওয়ায় নাম তালিকায় দেয়া যাবে না। এমন নানা অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা দাবি করা হয়।
সূত্র আরো জানায়, শিক্ষকদের শুধুমাত্র যে এমপিওভুক্ত হতেই নানাভাবে হয়রানি হতে হচ্ছে তা নয়, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বকেয়া বিল তুলতেও তাকে টাকা দিতে হয়। তালিকায় নাম যুক্ত করার জন্য মাউশি ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে সম্মানী দেয়ার নামে সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে অর্থও তোলা হয়। তদন্ত করলেই তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। চক্রের সদস্যরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতেও সাহস পায় না।
এদিকে এ বিষয়ে মাউশির পরিচালক অধ্যাপক বেলাল হোসেন জানান, মাউশি এমপিও করে না। আঞ্চলিক কার্যালয় করে থাকে। তবে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে ওই আলোকে ব্যবস্থা নেয় মাউশি।
আপনার মতামত লিখুন :