ArabicBengaliEnglishHindi

মাগুরায় স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা, গণপিটুনীতে নিহত-১ আহত-২


প্রকাশের সময় : জুন ১৫, ২০২২, ৮:৩০ অপরাহ্ন / ১৭৭
মাগুরায় স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা, গণপিটুনীতে নিহত-১ আহত-২
মাগুরা জেলা প্রতিনিধি ->>
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ছোনগাছা গ্রামের দিদার মন্ডলের স্কুল পড়–য়া কন্যাকে অপহরণের চেষ্টার সময় এলাকাবাসীর গণপিটুনীতে একই উপজেলার বরিশাট গ্রামের আব্দুল জলিল শেখের পুত্র রাসেল শেখ (২৮) নিহত হয়েছে ।  আহত হয়েছে একই গ্রামের আজ্জাত আলীর জোয়াদ্দারের পুত্র মঞ্জুরুল জোয়াদ্দার (২৫) এবং রাজা মৃধার পুত্র রাজু মৃধা (২২) ।  এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৪-জুন) সন্ধা সাড়ে ৭টার দিকে বরিশাট গ্রামের আজ্জাত আলীর পুত্র মঞ্জুরুল জোয়াদ্দারের নেতৃত্বে ৩টা মোটরসাইকেলে ৬জন যুবক দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে ছোনগাছা গ্রামের দিদার মন্ডলের বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করে তার স্কুল পড়–য়া কন্যা লিমা খাতুন (১৪) কে  পরিবারের লোকজনদের সামনে জোরপূর্বক অপহরণের চেষ্টা করে।
মেয়েটি যেতে না চাহিলে তাকে টেনে হিচড়ে পরনের কাপড় ছিড়ে ফেলে এবং ছোলা যুক্ত আহত করে। এমতাবস্থায় মেয়েটিসহ পরিবারের লোকজন আত্মচিৎকার দিলে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে দ্রæত ছুটে এসে অপহরণকারীদের মধ্যে ৩জনকে ২টি মোটরসাইকেলসহ আটক করে। আটকের পর এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন আটককৃত বরিশাট গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র রাসেল(২৮), আজ্জাত আলীর পুত্র মঞ্জুরুল(২৫) ও একই গ্রামের রাজা মৃধার পুত্র রাজু(২২)-কে গণধোলাই দিয়ে গুরুতর আহত করে।
বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাট গ্রামের সমাজসেবক কাজী তারিকুল ইসলাম জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভর্তির পর রাসেলের অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরন করেন।  সেখানে রাসেল চিকিৎসাধীন অবস্থায় (১৫-জুন) বুধবার সকালে  মারা যায়।
এ বিষয়ে নিহতের পিতা আব্দুল জলিল শেখ জানান, আমার ছেলে রাসেল ইজি বাইক চালাই। মঙ্গলবার সন্ধায় মঞ্জুরুল আমার ছেলেকে কিছু না বলে ছোনগাছা গ্রামে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ওই গ্রামের লোকজন আমার ছেলেকে মারধর করে মারাত্মক আহত করে। আহতবস্থায় রাসেল ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। যারা আমার ছেলে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে তাদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করি।  ছোনগাছা গ্রামের স্কুল ছাত্রী লিমা খাতুনের মা আয়েশা খাতুন জানান, আমার মেয়ে খামারপাড়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। সে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে বরিশাট গ্রামের মঞ্জুরুলসহ কয়েকজন বখাটে যুবক প্রায়ই তাকে বিরক্ত করতো। বিষয়টি আমরা পরিবার থেকে জানতে পেরে প্রায় ৫ মাস তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে রাখি এবং তার দ্রূত বিয়ের বিষয়ে চেষ্টা করি।
১৫-জুন বুধবার মেয়েটির বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। মঞ্জুরুলসহ তার বন্ধুরা বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে (১৪-জুন) মঙ্গলবার সন্ধার দিকে আমার বাড়িতে ঢুকে আমার কন্যাকে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে আমার মেয়েকে রক্ষা করতে আত্মচিৎকার দিলে প্রতিবেশিসহ গ্রামবাসি ছুটে এসে বখাটেদের হাত থেকে আমার মেয়েকে রক্ষা করে। এরপর অন্ধকার রাতে কি ঘটনা ঘটেছে আমরা তা কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ প্রিটন  সরকার জানান, ছোনগাছা গ্রামে একটি প্রেমঘটিত ঘটনায় বরিশাট গ্রামের ৬ জন যুবক মঙ্গলবার  রাতে লিমা নামে একটি মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানাহেচড়া করে। এসময় তার মা-বাবার চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এসে তাদের মারধর করে আহত করে। আহতের মধ্যে রাসেল চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায় ।
থানায় এখনও কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি । অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে । উক্ত ঘটনায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।