এমদাদুল হক শ্রাবণ ->>
ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার অন্যতম আন্দোলনকারী ও সমাজকর্মী সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে পিয়াংসুকে অবশেষে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
১২ ঘণ্টারও বেশি সময় তাদেরকে থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও পরে তাদেরকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলো পুলিশ।
রোববার ২৪ শে এপ্রিল দিনগত রাতে মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় মা-ছেলেকে ছেড়ে দিয়েছে কলাবাগান থানা পুলিশ।
কলাবাগান থানার ডিউটি অফিসার এসআই মো. শামীম “দৈনিক জনতার বাংলাকে” জানান, তাদের দু’জনকেই পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি কাজে আর বাধা দিবেন না এই মর্মে অঙ্গীকার করেছেন তারা।
এর আগে সন্ধ্যায় পুলিশ জানায়, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
সেই মামলায় মা-ছেলেকে গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার ২৫ শে এপ্রিল আদালতে পাঠানো হবে।
গ্রেফতারের খবরের পররই রোববার ২৪শে এপ্রিল রাতে সৈয়দা রত্না ও তার ছেলের মুক্তির দাবিতে কলাবাগান থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বাসিন্দা, মানবাধিকারকর্মী ও উদীচীর নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভকারীরা হাতে ‘হে পুলিশ আমার মা কই’, ‘পুলিশ আমার বোন কোথায়’, ‘পুলিশ আমার ভাই কোথায়’, ‘মাঠ দখল করে থানা চাই না’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে থানার সামনে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে রাত ১১ টার পর তাদেরকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয় পুলিশ।
রোববার ২৪শে এপ্রিল সকালে মাঠে পুলিশের উপস্থিতিতে তেঁতুলতলা মাঠে নির্মাণকাজ শুরু হলে সৈয়দা রত্না ফেসবুক লাইভে এসে নির্মাণ কাজের প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। এর মধ্যেই সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে পিয়াংসুকে আটক করে কলাবাগান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সে সময় থানা পুলিশ জানায়, নির্মাণকাজে বাধা ও ঠিকাদারকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগে দুইজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে কোন অপরাধ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঠে থানার ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। সকালে ওই মাঠের চারপাশে দেয়াল নির্মাণ করছিল পুলিশ। আর এ ঘটনা ফেসবুক লাইভে প্রচার করছিলেন তিনি।
গত ৩১শে জানুয়ারি মাঠটিতে তারকাঁটার বেড়া দিয়ে বেষ্টনী তৈরি করে পুলিশ। সেদিন মাঠে খেলতে যাওয়া কয়েক শিশুকে কান ধরে উঠবস করায় পুলিশ। পরে এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।
খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত জায়গাটিতে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে থানা ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী আন্দোলন করছে।
আপনার মতামত লিখুন :