এম এ মবিন ->>
শনিবার (১১ জুন) রাতে পল্লবী থানা পরিদর্শক (অপারেশন) উদয় কুমার মন্ডল এর নেতৃত্বে পল্লবী থানাধীন সেকশন-১২, সি উত্তর কালশী ইসিবি রোড, শতক ফুয়েল ষ্টেশন এর সামনে থেকে পল্লবী থানা পুলিশ ৫০ কেজি গাঁজা এবং একটি মাইক্রোবাস সহ মাদক ব্যবসায়ী চক্রের ৭ (সাত) সদস্য গ্রেফতার করা হয়।
পল্লবী থানার এস আই তারিক উর রহমান শুভ তার সঙ্গীয় এ এস আই মোঃ ফয়সাল হোসেন, কনস্টেবল আহমাদুল্লাহ সহ পল্লবী থানার হোন্ডা-পিকেট সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ পল্লবী থানা এলাকায় হোন্ডা মোবাইল ডিউটি চলাকালীন সময় নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ পায়,পল্লবী থানাধীন সেকশন-১২, ৬২/৫/১সি উত্তর কালশী ইসিবি রোড, শতক ফুয়েল ষ্টেশন এর সামনে’র রাস্তার উপর দিয়ে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসে বিপুল পরিমান মাদক নিয়ে উক্ত রাস্তা দিয়ে যাবে। উক্ত সংবাদ প্রাপ্তির পর বিষয়টি বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে উক্ত সংবাদের সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিতে পল্লবী পরিদর্শক (অপারেশন) উদয় কুমার মন্ডল এর নেতৃত্বে এসআই তারিক উর রহমান (শুভ) তার সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স সহ দ্রুত উল্লেখিত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে চেকপোস্ট এর ব্যবস্থা করেন।
শনিবার রাত সাড়ে নয়টায় শতক ফুয়েল ষ্টেশন এর সামনের রাস্তা দিয়ে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস দেখতে পেয়ে চেকপোস্ট ডিউটিরত পুলিশ কর্তৃক সিগনাল দেয়া হয়।
মাইক্রোবাসটি দাড়ানোর পর এসআই তারিক উর রহমান শুভ ড্রাইভিং সিটে থাকা ব্যক্তিকে গাড়ীর কাজগপত্র দেখাতে বলে এবং তারা কোথায় যাবে প্রশ্ন করায় সে বিব্রত হয়ে গেলে তার গতিবিধি এসআই শুভ এর কাছে সন্দেহজনক মনে হলে তাকে গাড়ী থেকে নামতে বলা হয়। মাইক্রোবাসের ভিতরে থাকা ৬ জন আরোহীকে নামতে বললে তারা সকলেই দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকারে। পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) উদয় কুমার মন্ডল এর নির্দেশক্রমে অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় উপরোক্ত সর্বমোট ০৭ জন পুরুষ আটক করেন।
আটক কৃতরা হলেন ১. মোঃ জাকির হোসেন (৩৩), পিতা-মোঃ আকবর হোসেন, মাতা-মোছাঃ রাজিনা বেগম, সাং-দাউদগাঁও, পো-মিরপুর বাজার, থানা-বাহুবল, জেলা-হবিগঞ্জ, ২. মোঃ আল-আমিন (৩৫), পিতা-মৃত সাপন আলী, মাতা-জাহেরা খাতুন, সাং-বেরন, পো-বলাকড়ই, থানা-নাসিরনগর, থানা-বি-বাড়িয়া, ৩. মোঃ ফারুক মিয়া (৩৮), পিতা-মৃত সাদু খান, মাতা-জাহেরা খাতুন, সাং-আলীনগর, পো-ধর্মঘর, থানা-মাদবপুর, জেলা-হবিগঞ্জ, ৪. মোঃ শাহিন মিয়া (৪০), পিতা-মৃত সুরত আলী, মাতা-মাহমুদ বেগম, সাং-দুলিয়া খাল, পো-গোপায়া, থানা-হবিগঞ্জ সদর, জেলা-হবিগঞ্জ, ৫. মোঃ নজরুল ইসলাম রোকন (২৬), পিতা-মোঃ মোহরম আলী, মাতা-মোছাঃ পারভীন বেগম, সাং-ভুসলী, পো-মিরপুর বাজার, থানা-বাহুবল, জেলা-হবিগঞ্জ, ৬. মোঃ শাহ আলম (২৬), পিতা-মোঃ দারগা আলী, মাতা-মোছাঃ ছকেরা খাতুন, সাংÑআলাপুর, পো-ফকিরাবাদ, থানা-হবিগঞ্জ সদর, জেলা-হবিগঞ্জ, ৭. মোঃ আব্দুল মান্নান মিয়া (৩৯), পিতা-মৃত আবুল হোসেন, মাতা-মৃত মস্তরা বানু, সাং-ভুগলী, পো-মিরপুর বাজার, থানা-বাহুবল, জেলা-হবিগঞ্জ।
আটোক কৃতদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের পিছনের সিটের উপর এবং সিটের নীচে রক্ষিত ৫টি প্লাস্টিকের বস্তায় ১০ কেজি করে মোট ৫০ (পঞ্চাশ) কেজি গাঁজা পাওয়া যায় তার আনুমানিক বাজার মূল্য আনুমানিক ১৫,০০,০০০/(পনের লক্ষ) টাকা।
আসামী জাকির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কালো রঙের মাইক্রোবাস মাদকদ্রব্য আনা নেওয়ার ও বিক্রয়ের কাজে ব্যবহার করতো যাহার নম্বর ঢাকা মেট্রো-চ ১৪-২৫২২।
আল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, সে দীর্ঘদিন যাবত কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকা তার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সহায়তা এবং পাইকারীভাবে মাদকের চালান নিয়ে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকা নিয়ে আসে। ঢাকায় চালান পৌছানোর পর আসামী জাকির হোসেন এর উক্ত মাইক্রোবাসের সাহায্যে ৩, ৪, ৫, ৬ এবং ৭ নং আসামীদের দ্বারা দেশের বিভিন্ন এলাকার ছোট ছোট মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট খুচরা বিক্রয়ের কাজ করায় বলে বলেন।
মাদকদ্রব্যের মূল উৎস, সরবরাহকারী চক্র এবং তাদের সহায়তাকারীদের সনাক্তপূর্বক গ্রেফতারের লক্ষ্যে আসামীদের (সাত) দিনের পুলিশ রিমান্ডে আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উক্ত আসামিদের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন মামলা করা হয় যাহার নং-৩৫/৫৪৯, ধারা- ৩৬(১) সারণির ১৯(গ)/৩৮ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮।
আজ সকাল ১১ টায় পল্লবী থানা অডিটোরিয়াম হলে সংবাদ সন্মেলনে, অফিসার ইনচার্জ মোঃ পারভেজ ইসলাম, পিপিএম (বার) বলেন, কতিপয় মাদক কারবারি মাইক্রোবাসে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে উত্তর কালশী ইসিবি রোডের “শতক ফুয়েল স্টেশন’’ এর সামনে দিয়ে যাবে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) উদয় কুমার মন্ডল এর নেতৃত্বে ওই এলাকায় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে চেকপোস্ট স্থাপন করে। কাঙ্ক্ষিত মাইক্রোবাসটি আসলে থামার সংকেত দেয়া হয়। মাইক্রোবাসের কাগজপত্র ও আরোহীদের গন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তারা কোন সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। পরবর্তীতে তাদের গাড়ি থেকে নামতে বললে তারা পালানো চেষ্টা করে। এসময় জাকির, আল আমিন, ফারুক, শাহিন, নজরুল, শাহ আলম ও আব্দুল মান্নানকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে মাইক্রোবাসটি তল্লাশি করে ৫০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। গাঁজা পরিবহনে ব্যবহৃত হওয়ায় মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮, ধারা- ৩৬(১) সারণির ১৯(গ)/৩৮ মামলা করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :