ArabicBengaliEnglishHindi

রাজধানী ঢাকায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী ও প্রতারক খন্দকার ইকবাল- দম্পতি গ্রেফতার


প্রকাশের সময় : জুন ১৫, ২০২২, ১:২৯ অপরাহ্ন / ৭১
রাজধানী ঢাকায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী ও প্রতারক খন্দকার ইকবাল- দম্পতি গ্রেফতার
এস এম জীবন ->>
সাম্প্রতিককালে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর পেশাদার প্রতারক চক্র।
অতি সম্প্রতি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম), ই-কমার্স, সমবায় সমিতি, এনজিও, অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সর্বশান্ত করার বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছে র‌্যাব। এই সকল প্রতারকদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে “ফাল্গুনী ডটকম”, “শিবপুর ক্ষুদ্র ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড” “চেতনা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড” চাকরির দেয়ার নামে জাল সনদ-সিল ব্যবহার করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক আব্দুল মালেক, দেড় হাজার তিতাস গ্রাহকের গ্যাস বিলের ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ জালিয়াতির মূলহোতা ফারুক, শীর্ষ প্রতারক শাহীরুল ইসলাম সিকদার, ও “কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ” এর মতো বেশকিছু সফল অভিযান পরিচালনা করেছে র‌্যাব-৪।
এরই ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারা যায় যে, বিভিন্ন অনিয়ম/দুর্নীতি অতঃপর চাকুরীচ্যুত এবং প্রতারনার মাধ্যমে একাধিক প্রাইভেট কোম্পানী ও একাধিক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এর মাধ্যমে গড়ে তোলা সম্পদের পাহাড় গড়েছে একটি চক্র। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ১৩/০৬/২০২২ ইং তারিখ সকাল ১১.৫৫ ঘটিকায় রাজধানীর সিদ্বেশ্বরী ও বনশ্রী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ০১ টি পিস্তুল, ০১ রাউন্ড গুলি, জাল নোট-৯,৫০,০০০/-টাকা, প্রাইজবন্ড-১,৩০,০০০/-টাকা, বিভিন্ন জমির দলিল ও বিভিন্ন নথিপত্রসহ নিম্নোক্ত কুখ্যাত প্রতারকচক্রের মূলহোতাসহ ০২ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়ঃ
 খোন্দকার মুহাম্মদ ইকবাল(৪২), জেলা- ফেনী,
 মোসাঃ হালিমা আক্তার (৪০), জেলা- ফেনী
 প্রতারক মালেকের উত্থান ও প্রতারণার কৌশলঃ খন্দকার ইকবাল (৪২) এর নিজ গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার পরশুরাম থানা এলাকায়। সে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বিগত ২০০৫ সালে শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেটে তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী “সহকারী হিসাব রক্ষক” পদে চাকুরী নিযুক্ত হবার পরে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকল্পের ৩৮ কোটি  ৭১ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদক কর্তৃক অভিযুক্ত হয়। উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পে ইকবাল সিন্ডিকেটের নানা অনিয়ম/দুর্নীতি,অতঃপর চাকুরীচ্যুত এবং প্রতারণার মাধ্যমে একাধিক প্রাইভেট কোম্পানী ও একাধিক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এর মাধ্যমে গড়ে তোলে অবৈধ কথিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সরকারী সম্পদ আত্মসাৎ করে গ্রেফতারকৃত খন্দকার ইকবাল ও তার নিজ স্ত্রী হালিমা আক্তারসহ অন্যান্য আত্মীয়- স্বজনদের নামে বিভিন্ন নাম সর্বস্ব কোম্পানী রয়েছে। এছাড়াও দেশের বাহিরে কানাডা ও আমেরিকায় আত্মীয়  স্বজনের নামে কোটি কোটি টাকা মানিলন্ডারিং করে এবং রাজস্ব ট্যাক্স ফাঁকি  দিয়েছে। যা তার স্ত্রী হালিমা আক্তার নামে মালিকাধীন বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্ট থেকে পরিশোধ করা হয়েছে।
 প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণঃ  গাড়ীর সংখ্যাঃ  ড্রাম ট্রাক, মিনিবাস, পিকআপ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, জীপসহ মোট ২৭০ টি গাড়ী যাহার মধ্যে অভিযুক্ত খন্দকার ইকবাল হোসেন ০৩ টি পাজারো গাড়ি নিজে ব্যবহার করছে মর্মে জানা যায়। তার নিজস্ব কোম্পানীর নামে, যাহার প্রোপাইটার তার নিজ স্ত্রী হালিমা আক্তারসহ অন্যান্য আত্মীয়- স্বজনদের নামে  ৯০ টি গাড়ীর রেজিস্ট্রিকৃত কিছু তথ্য পাওয়া যায়।  ফ্লাটের বিবরনঃ অবৈধ ভাবে উপার্জিত টাকার মাধ্যমে ক্রয়কৃত জানা মতে তাহাদের ফ্ল্যাটের সংখ্যা-১৮৭ টি।
খন্দকার ইকবাল হোসেন নিজ স্ত্রী হালিমা আক্তার, শ^শুর মোঃ রফিকুল ইসলাম, ভাই (১) খন্দকার বোরহান উদ্দিন, (২) খন্দকার ইসমাইল হোসেন ছাড়াও শ্যালক সহ অন্যান্য আত্মীয়- স্বজনদের নামে বিভিন্ন নাম সর্বস্ব নিম্নোক্ত কোম্পানী ঃ
 ১। নুসরাত ট্রেডার্স,
 ২। টিআই ইন্টার ন্যাশনাল,
 ৩। র‌্যানকোন,
 ৪। ইনার্জিপ্যাক,
 ৫। ওয়ান পয়েন্ট ফার্মা এন্ড ডিপার্টমেন্টাল স্টোর,
 ৬। নাইনো রিসোর্ট,
 ৭। ইউটোপিয়া প্রোপার্টিজ লিঃ,
 ৮। ঘোনী ডট কম,
 ৯। কে এম আই পোল্ট্রি, ডেইরী এন্ড এগ্রো ফার্ম লিঃ  ইত্যাদিসহ একাধিক কথিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতারণাপূর্বক সরকারকে ট্যাক্স ফাকি দিয়ে শত কোটি টাকার অবৈধ নামে-বেনামে ব্যবসা পরিচালনা করছে এবং সাধারন ও নিরীহ জনগনের  নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে। উক্ত প্রতারক চক্রের  বিরুদ্ধে দূনীতি দমন কমিশন কর্তৃক ১৭টি মামলা চলমান রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামী কৃত অপকর্মের বিষয়টি স্বীকার

করেছে এবং এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে এইরুপ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।