আলমগির হোসেন ->>
গত ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর ঝড়ের কবলে পড়ে ভারতে ভেসে যাওয়া পাথরঘাটা,বরগুনা পিরোজপুর ও ভোলার ৯০ জেলে এখনো ফিরে আসতে পারেনি বাংলাদেশে।
এদের মধ্যে ভারতের কাকদীপে ৪৬, রায়দীঘি ১১ মৈপিট ১৭ ও কেনিং আশ্রয় কেন্দ্র ১৬ জেলেসহ ৯০ জেলে ভারতে চরমভাবে জীবনযাপন করছেন বলে জানিয়েছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
এছাড়া এখনো পাথরঘাটার ছগির আলমের মালিকানাধিন এফবি সিরাজুল হক ট্রলারের ৬ ও বরগুনার নলির মোঃ জাহাঙ্গীর মোল্লার মালিকানাধিন এফবি ভাই ভাই ট্রলারের ২ এবং বরগুনার নিশান বাড়িয়ার মোঃ ছত্তার মাষ্টারের মালিকানাধিন এফবি মাহদি ট্রলারের ১জনসহ ৯ জেলের খোঁজ মিলেনি এবং চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা গেছেন ভারতের কাকদীপ আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয় গ্রহনকরা মহিপুরের ইউনুছ গাজী।
জানা গেছে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পাথরঘাটার বিএফডিসি থেকে ছগির আলমের এফবি সিরাজুল হক ট্রলার নিয়ে ১১ জেলে ইলিশ শিকারে যান গভীর সমুদ্রে। ১৮ আগস্ট নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঝড়ে ডুবে যায় ট্রলারটি। উত্তাল সমুদ্রের ভাসতে ভাসতে ভারতের কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় পাঁচ জেলে দেশে ফিরে এলেও এখনো খোঁজ মেলেনি বাকি ছয় জেলের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ভারতে থাকা ৯০ জেলেসহ নিখোঁজ জেলেদের পরিবারগুলো চরম শঙ্কায়সহ অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে। নিখোঁজ ছগির আলমের এফবি সিরাজুল হক ট্রলারের জেলে মোঃ হাকিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে অর্ধাহারে অনাহারে চলছে তাদের সংসার।
হাকিমের বাড়িতে গিয়ে তাদের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে সংবাদ প্রতিনিধির সাথে কান্নায় ভেগেং পড়েন তার পরিবার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে একই ভাবে জীবনযাপন ও শঙ্কায় দিন কাটছে নিখোঁজ অন্যান্য পরিবার গুলোরও।
জানতে চাইলে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন নিখোঁজ জেলে পরিবারগুলো যোগাযোগ করলে উপজেলা পরিষদ থেকে কিছু সহায়তা করা হবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরেই জেলে নেতাদের সাথে বৈঠক করে কোন জেলে সাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে মারা গেলে অথবা নিখোঁজ হলে ওই পরিবারটি যাতে চলতে পারে এজন্য একটি ফান্ড তৈরী করতে বলে, আমি নিজেও ব্যক্তিগত ভাবে সেখানে আর্থিক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করলেও জেলে নেতারা বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
ফান্ড তৈরীর ব্যাপারে জানতে চাইলে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন চেয়ারম্যান মোন্তফা গোলাম কবির উদ্যোগ নিলেও বর্তমান বছর ইলিশের আকাল থাকায় ট্রলার মালিকগন আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়ায় ফান্ড তৈরী করা সম্ভব হয়নী।
ভারতে আটক জেলেদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন ১৯ সেপ্টেম্বর আমি ভারতে গিয়ে অনেক চেষ্টা করে ৩২ জেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হলেও ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার যথাযথা সহায়তা না করায় ঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ভারতে ভেসে যাওয়া বাকি জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। তবে জেলেদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :