শিশু গৃহকর্মীদের অধিকার আদায়ে সরকারের পাশাপাশি দরকার বেসরকারী উদ্যোগ
প্রকাশের সময় : মার্চ ২, ২০২২, ৪:৩০ অপরাহ্ন /
১২৯
স্টাফ রিপোর্টার ->>
গৃহ শিশুশ্রম বাংলাদেশে একটি জটিল সামাজিক সমস্যা। বাংলাদেশের প্রচলিত কোন আইনেই শ্রম হিসেবে এই কাজটির কোন স্বীকৃতি নেই। যেকোন বিবেচনায় এটি শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের তালিকায় এর উল্লেখ নেই। এছাড়া জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ ২০১৩ অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৭ লাখ শিশু শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও তাদের মধ্যে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশু শ্রমিকের কোন উল্লেখ নাই। গৃহ শিশুশ্রম সবসময়েই উপেক্ষিত থেকে গেছে।
এ বিষয়ে সালিশী ও আইন সহায়তা কেন্দ্র মানবাধিকার, নওগাঁ এর নির্বাহী অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা আগের থেকে অনেক উন্নত হলেও শিশুগৃহ শ্রমিকদের প্রতি মানুষের সাংস্কৃতিক চিন্তা ভাবনার খুব একটা উন্নতি হয়নি। তাছাড়া স্বল্প বেতনে কাজে রাখার জন্য মেয়ে গৃহকর্মীদেরকে কাজে নেওয়ার ব্যাপারে বেশি অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়। এই পর্যন্ত অনেক ভয়ানক ভয়ানক শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা আমরা দেখতে পেরেছি। কিন্তু এর মধ্যে বেশিরভাগরই বিচারকাজ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় নি। এর আগেই মামলার সমঝোতা করা হয়েছে। যার কারণে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের ব্যাপারে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গীর খুব একটা পরিবর্তন হয় নি। যার ফলে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের সঠিক বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়ে উঠে না। শিশু গৃহ কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে এদেরকে আইনের মাধ্যমে স্বীকৃতির মধ্যে আনতে হবে।
জাতীয় দৈনিক খবর বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ জাকির হোসেন মোল্যা বলেন, যে সকল মেয়েরা গৃহ কর্মী হিসেবে বাসায় কাজ করে তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ সময়ও বিশ্রামের সুযোগ পায় না। এমনকি তারা কাজ করে টাকাও পায় না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের বেতন দেওয়া হয় তাদের অভিভাবকের কাছে। তিনি আরও বলেন, শিশু গৃহকর্মীদের সুরক্ষার জন্য গৃহীত নীতিমালার বাস্তবায়ন না করলে তাদের অবস্থার খুব একটা উন্নতি হবে না। সরকার আইএলও কনভেনশন ১৮৯ এখনো অনুমোদন না করলেও শিশু গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। তবে তা বাস্তবায়নের অভাবে খুব একটা প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে না। সেই সাথে গৃহ শিশুকর্মী শিশুশ্রমের অন্যতম একটি অপ্রাতিষ্ঠানিকখাত যেখানে বিশাল সংখ্যক শিশু শ্রমে নিয়োজিত আছে এবং প্রায়শই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কাজেই তা বন্ধ করতে হলে এদেরকে আইনগত স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি যা এখনো করা হয় নি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ শিশু অধিকার বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি সংগঠন বা এনজিও সমূহের এ বিষয়ে আরো বেশী কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারীভাবে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের মৌলিক অধিকার সহ সকল ধরনের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আইন বাস্তবায়নের উদ্যেগ নিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :