স্বপন সরকার,কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি ->>
অসময়ে হঠাৎ তুরাগ নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ধরণের স্বপ্নের ফসল ডুবে যাচ্ছে। কষ্টের ফসল নষ্ট হচ্ছে দেখে দিশেহারা হয়ে পড়ছে কৃষক। মাইকিং করে নদী ও খালে বাঁধ দিয়ে সেই স্বপ্ন বাঁচানোর চেষ্টা করছেন গ্রামবাসী। অথচ কোনো খোঁজ-খবর নিচ্ছে না উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
সরেজমিনে ঘুরে ও ভুক্তভোগী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চৈত্র মাসের যে সময়ে তুরাগ নদী শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়। আর চাষাবাদে সেচ পাম্প ব্যবহারে করে। কষ্ট করে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল ফলানো চাষিরা যখন ফসল তোলার স্বপ্ন দেখছিল তখন অসময়ে হঠাৎ তুরাগ নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ায় কৃষকের সেই স্বপ্নে ঘুরে বালি। এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শত শত হেক্টর জমির বোরো আবাদ পানিতে ডুবে যাচ্ছে। এর মধ্যে মকস বিল, আলোয়ার বিল, বড়ইবাড়ি পশ্চিমবাইদ, উজান বিল, কালিয়াদহ, বোয়ালীসহ বিভিন্ন বিলে-চকে বোরো ধান কাটা এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
যার কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। বাধ্য হয়েই অনেকেই কাঁচা ও আধা পাকা ধান কেটে ফেলছেন। এছাড়াও মাইকিং করে ফসল রক্ষায় চাপাইর ইউনিয়নের বড়ইবাড়ী এলাকায় খালে ও বোয়ালী উইনয়নের রগোনাথপুর এলাকায় গোয়ালীয়া নদীসহ বিভিন্ন এলাকায় খালের মুখে বাঁশ, মাটি, বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করেছেন গ্রামবাসী। এ বাঁধের মাধ্যমে কৃষক তাদের স্বপ্নের সেই ধানসহ বিভিন্ন ফসল ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। একদিকে জোয়ারের পানিতে জমির ধান নষ্ট অপর দিকে ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি জন প্রতি আটশ থেকে এক হাজার টাকা হওয়ায় অনেকেই শ্রমিকের অভাবে সেই ধানও কাটতে পারছেন না। এসব এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন, ধারদেনা ও ঋণ করে অনেক কষ্টে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করেছি। সেই কষ্টের সোনার ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
গত কয়েক দিনে হঠাৎ জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় ধানের চিন্তাই দিশেহারা হয়ে পড়েছি, রাঁতে ঘুমাতেও পারি না। বেশি ক্ষতি হয়ে যাইবো বলে অনেকেই কাচা ধানই কেটে ফেলছে। তাদের অভিযোগ, স্থানীয়রা কৃষকের স্বপ্ন বাঁচানোর চেষ্টা করলেও এদিকে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের যেন কোনো নজর নেই। কোনো উদ্যোগ ও সহযোগীতার হাত বাড়ায়নি উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
বোয়ালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবজাল হোসেন বলেন, ‘অসময়ে জোয়ারের পানিতে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে ফসল রক্ষায় আমরা সবাই মিলে রগোনাথপুর ব্রিজের নিচে গোয়ালীয়া নদীতে বাঁধ দিয়েছি। কৃষকের স্বপ্ন বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর ১০ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে বোরে ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে দেড় থেকে দুই হাজার হেক্টর জমি বিভিন্ন বিলের মধ্যে। গত কয়েকদিন ধরে তুরাগ নদীর জোয়ারের পানিতে ধান ডুবে গেছে। তবে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সহযোগীতা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :