ArabicBengaliEnglishHindi

কালিয়াকৈরে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষে সফলতা আব্দুল মালেক মাষ্টার


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২, ২০২২, ১১:২৬ অপরাহ্ন / ৩৭৬
কালিয়াকৈরে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষে সফলতা আব্দুল মালেক মাষ্টার

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি ->>

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার টালাবহ এলাকার ফলিমারা বিলে বছরের প্রায় সময়ই জলাবদ্ধ থাকে । এ অঞ্চলে বেশির ভাগ জমিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় বছরের ছয় মাস এ অঞ্চলের জমিতে পানি জমা থাকে। তাই বছরে একবারই জমিতে চাষাবাদ করা যায়। বাকি সময় পানি জমে থাকার কারণে জমি থাকে অনাবাদি। বদ্ধ পানিতে আগাছা ও কচুরিপানায় ভরে যায় জমি।

সরেজমিনে ঘুরে জানাযায়, উপজেলার টালাবহ গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুস ছালামের ছেলে মো. আব্দুল মালেক মাস্টার নতুন এক পদ্ধতি ব্যবহার করে এসব জলমগ্ন অনাবাদি জমিতে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে সফলতার অপার সম্ভাবনা দেখিয়েছেন এলাকাবাসীকে।

মালেক মাস্টার পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি উপজেলার ভাউমান টালবহু মডেল হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। শৈশবকাল থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি তার কৃষিকাজে ব্যাপক আগ্রহ। তাই তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি অবসর সময়টুকু কৃষিকাজে ব্যয় করেন। মালেক মাস্টারের সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। গত বছর তিনি পরীক্ষামূলকভাবে নিজের এক খণ্ড জমিতে ভাসমান ধাপে সবজি চাষ শুরু করেন । অল্প সময়ে, স্বল্প ব্যয়ে অধিক মুনাফা অর্জনের কারণে এলাকার অনেকেই এখন তার পদ্ধতি অনুসরণ করে সবজি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। সরজমিনে দেখা গেছে, মালেক মাস্টারের ভাসমান সবজি খেতে শশা, কাঁকরোল, করলা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বেগুন, লালশাক ও পালংশাক চাষের সমারোহ

মালেক মাস্টার জানান, ইন্টারনেট ঘেঁটে ইউটিউব দেখে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ। সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তিনি। গত মৌসুমে ৫ শতাংশ জমির ওপর দুটি ধাপ বা বেড তৈরি করে লাউসহ আরো কয়েক প্রকার সবজি চাষ করেন। প্রথম প্রকল্প থেকেই তিনি অন্তত ৫০০ লাউ তুলেছিলেন । এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও কয়েক গুণ লাভ পেয়েছেন । চলতি মৌসুমে তিনি ২৫ শতাংশ জমিতে ভাসমান পদ্ধতিতে শশা, কাঁকরোল, করলা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বেগুন, লালশাক ও পালংশাক আবাদ করেছেন। এতে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় ইতিমধ্যেই অর্ধলক্ষাধিক টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। চলতি মৌসুমেই ঐ জমি থেকে কম পক্ষে আরো ৭০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, কোনো ধরনের রাসায়নিক সার ছাড়াই জৈব সার ব্যবহার করে এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন ও সবজি চাষ ক্রমান্বয়ে দেশের কৃষক ও কৃষি গবেষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দেশের নিম্নাঞ্চলের যেসব এলাকার জমি বেশির ভাগ সময় পানিতে ডুবে থাকে সেসব জমিতে এ পদ্ধতি অনুসরণ করে বাণিজ্যিকভাবে সবজি চাষাবাদে সফলতা অর্জন করা যেতে পারে। ভাসমান বেডে শীত ও বর্ষাকালীন শাক-সবজি চাষ করা সম্ভব। এতে খরচও কম। রোগ বালাই, পোকা-মাকড়ের উপদ্রবও কম। কীটনাশক ও সার তেমন একটা দিতে হয় না।