ArabicBengaliEnglishHindi

কোনো কিছুই মানছে না শেরপুরে বন্যহাতি দল


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২০, ২০২২, ৮:১৩ অপরাহ্ন / ৩৩০
কোনো কিছুই মানছে না শেরপুরে বন্যহাতি দল

শেরপুর প্রতিনিধি ->>
শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তবর্তী গহিন জঙ্গল বানাই চেরেঙ্গিপাড়ায় বন্যহাতির একটি দল গত এক মাসের অধিক সময় অবস্থান করছে। দিনের আলো নিভে সন্ধ্যা নামার আগ মুহুর্তে জঙ্গল থেকে ধান গাছ খাওয়ার নেশায় হানা দিচ্ছে সীমান্তের ফসলি জমিতে। মঙ্গলবার ১৮ অক্টোবর দিবাগত রাত থেকে ২০ অক্টোবর ভোর পর্যন্ত তান্ডব চালিয়ে মায়াঘাষি, পানিহাতা, টিলাপাড়া, ফেকমারী গোপালপুর গ্রামের অন্তত ১০ জন কৃষকের ২০ একরের অধিক জমির জমির ধান নষ্ট করেছে। এছাড়াও বিনষ্ট করেছে সামাজিক বনায়নের বহু ছোট বড় চারা গাছ। গত এক মাস ধরে এ এলাকায় বন্যহাতির দল অবস্থান করায় মানুষজনের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। জীবন-সম্পদ রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা। এদিকে বন্যহাতির সমতলে ভূমিতে প্রবেশ ও মানুষের জানমালের ক্ষতি ঠেকাতে সরকার বৈদ্যুতিক সোলার ফেনসিং প্রকল্পে তারের লাইনে সংযোগ দিয়ে প্রায় ১০ কিমি. এলাকায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিলেও তা কাজেই আসছে না। বন্যহাতি মানছে না কোন বাধা। এটির নিচ দিয়েই বন্যহাতির দল পার হয়ে ফসলের মাঠে অনায়েসে ঢুকে যাচ্ছে এবং ফসল খেয়ে পায়ে মাড়িয়ে সাবাড় করে ফেলেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মায়ঘাষী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে রজব আলির দেড় একর, রমজান আলীর দেড় একর, সাইদুল ইসলাম ১ একর, সমেদ আলি, আ. মজিদ, আ. হামিদের পঞ্চাশ শতাংশ করে ও তার দুই ছেলের আরও এক একর জমির ধান বিনষ্ট করেছে। এছাড়াও গত এক সপ্তাহ পূর্বে এই বন্যহাতি আরো ১০জন কৃষকের জমির ধান ও গাছ বিনষ্ট করেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন, আ. কাদির, হুসেন আলী, আশালতা নেংওয়ার, আবু বক্কর সিদ্দিক, সাহাবুদ্দিন, কাইুয়ুম, তাইজুল, সাহেদ আলী, রুবেল মিয়ার জমির ধান বিনষ্ট করেছে। এরা আমনের কালিজিরা, পাইজাম, উনপঞ্চাশ জাতের ধান রোপন করেছিলেন বলে জানান।

পানিহাতা মায়াঘাষি টিলাপাড়া গ্রামের কৃষক প্রভা দিও ও কার্তিনা চিশিম বলেন, এ পাহাড়েই আমাদের আদি বাসস্থান। পাহাড়ে আমাদের অল্প কিছু জমি আছে। এখানে এ ধান রোপন করে যা হয় তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। এখন এ হাতি আমাদের জমির ধান পায়ে মাড়িয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন আমার এ বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকবো। গরু ছাগল ঘাস খাওয়ানুর জন্য বনের ভিতর যেতে পারছি না। বন্য হাতির দল অবস্থান করায় এ এলাকার আমাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। রাত জাগায় আমাদের চোখ মুখ পুলে গেছে।

বন বিভাগ নালিতাবাড়ী মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিক মিয়া বলেন, বিশেষ করে ধানের সময় এরা বেশি মাত্রায় পাহাড়ি এলাকায় তান্ডব চালায়। অনেক কৃষককের জমির ধান ক্ষেত বন্যহাতি নষ্ট করেছে। তাদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে সরকার প্রণোদনা দিচ্ছেন।

নালিতাবাড়ী উপজেলা র্নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন বলেন, আসলে বন্যহাতি কোনো কিছুই মানছে না। কাটা জাতীয় গাছ রোপন, ক্যাকটাসসহ আরও কিছু গাছ রোপন করলে সেটি কাজে আসতে পারে। এছাড়াও কৃষকের যার যার ক্ষতি হয়েছে তারা ক্ষতিপূরণের আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ পাবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মায়াঘাসী গ্রামে গহীন বনে অবস্থান করছে বন্য হাতির দল।