নেত্রকোনায় সরকারি ঘর পেলেন না এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জিকু মিয়া
প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১৫, ২০২২, ৪:০৪ পূর্বাহ্ন /
১১৪৫
নেত্রকোনা প্রতিনিধি : শিলা বৃষ্টিতে পলেথিনের ঘর জরাজীর্ণ হওয়ায় বর্তমানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কনকনে শীতে মানবেতর জীবন নিয়ে বসবাস করছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জিকু মিয়া।
ঘর সংস্কারের আর্থিক সাহায্য ও নতুন সরকারী পাকা ঘরের জন্য নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করেও মেলেনি কোন ধরণের প্রতিকার উল্টো ঘুড়তে হয়েছে ইউএনও অফিস চত্তরে দিনের পর দিন।
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলা সাহতা ইউনিয়নের সাহতা এলাকার সালেক মিয়া ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জিকু মিয়া (৩০)। নিজের কোন জায়গা নেই সরকারি খাস জমিতে ভাঙ্গা বাঁশের পলেথিনের ঘর শিলা বৃষ্টিতে ভেঙ্গে জরাজীর্ণ অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন অসহায় হতদরিদ্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জিকু মিয়া।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি জায়গায় পলেথিন ও বাশেঁর চালা দিয়ে ঘর করে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কনকনে শীতে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তার। উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের দেওয়া তিন মাস অন্তর অন্তর প্রতিবন্ধী ভাতা ২১৫০/- দিয়ে চলে তার সংসার।
অশ্রুশীক্ত চোখে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জিকু মিয়া সংবাদকর্মীকে জানান, আমি ঘরের সংস্কার ও একটি সরকারী ঘরের জন্য দরখাস্ত সাহতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরাবরে দিলে তিনি সরেজমিনে তদন্ত করে গত (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০) বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে ঘর সংস্কার ও সরকারী ঘরের সুপারিশ করেন তিনি।
এদিকে গত (৩০ আগষ্ট ২০২১) বারহাট্টা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা ডাক ফাইলে লিখিত আবেদন না পড়ে তিনি সমাজ সেবা অধিদপ্তরে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জিকু মিয়া কয়েক মাস ধরে বারহাট্টা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে দিনের পর দিন ঘুরতে থাকেন।
গণমাধ্যমকর্মীর চোখে পড়লে জিকু মিয়া উপজেলা কার্যালয়ের গোল চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছেন নির্বাহী কর্মকর্তা কখন আসবেন। উল্লেক্ষ্য করে জিঙ্গাসা করলে উত্তরে আবেগ আফ্লুত চোখের জলে তিনি জানান, কয়েক মাস ধরে ঘুরতেছি ইউএনও সাথে দেখা করবো আমার ঘরের চালা নেই পলেথিনের ঘর বসবাস করতে পারি না।
এদিকে তার একথা শুনে সাবেক বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধি জিকু মিয়ার ঘরের জন্যে আবেদন জমা করে এসেছি, আমার সময়ের অভাবে আমি নিজে জিকু মিয়ার ঘরটি দিয়ে আসতে পারি নাই।তবে আবেদন করা আছে দ্রুত সময়ের মধ্যেই জিকু মিয়া সরকারি ঘর পাবে।
এ ব্যাপারে বতর্মান উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাজহারুল ইসলামের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,আমি একটু কাজে বাইরে আছি আপনারা অফিসে অপেক্ষা করুন, এভাবে সংবাদকর্মীকে তিনি বলেন।
এ বিষয়ে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাইনুল হক কাশেমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সরজমিনে তার ঘরের অবস্থা দেখে সুপারিশ করি জিকু মিয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সরকারী ঘর তার জন্য নতুন পাকা ঘর পেলেই কিছুটা হলেও ভালো থাকবেন তিনি।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি আবদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর অবশ্যই দৃষ্টি প্রতিবন্ধি জিকু মিয়া পাবে আমি ইউএনওকে বলছি সরেজমিনে তদন্ত করে জিকু মিয়াকে যেন একটি সরকারি ঘরের ব্যবস্হা করে দেয়।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জিকু মিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেত্রকোনার মানবিক জেলা প্রশাসক কাজি আবদুর রহমান এবং বারহাট্টা উপজেলার সাহসী ও কর্মদক্ষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাজহারুল ইসলামের নিকট একটি সরকারি ঘরের জন্য আকুতি জানান এই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জিকু মিয়া।
আপনার মতামত লিখুন :