আশরাফুল আলম,(দিনাজপুর)->>
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে এমবিবিএস ডাক্তারের চেয়ারে বসে চিকিৎসা দিচ্ছে উপ-সহকারী মোঃ আব্বাস আলী। অবলিলায় হায়ার এন্টিবায়োটিক লিখেই যাচ্ছে। যেনো দেখার কেউ নেই। কর্তৃপক্ষ দেখেও এদের দেখছেনা। এমবিবিএস ডাক্তারের পাশে থেকে সহযোগিতা করার কথা থাকলেও নিজেরাই এমবিবিএস ডাক্তার সেজে বসে আছে। অনিয়মেই এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে। রোগিদের সাথে খারাপ ব্যবহার হরহামেশাই ঘটছে। রোগিরা তাদের প্রাপ্য আচরণ ও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে বদরগন্জ মাদ্রাসা থেকে মিজানুর রহমান দুই শিক্ষার্থীকে তাদের নিজ বাড়ী রতনপুরে মোটরসাইকেলে নিয়ে আসার পথে মধ্যপাড়া শালবাগানে রাস্তায় এক্সিডেন্ট করে বাচ্চা দুটিসহ মিজানুর রহমান রক্তাক্ত জখম হয়। ফুলবাড়ীর মায়ের দোয়া পত্রিকা এজেন্ট মোঃ মোন্নাফ ঘটনাস্থল থেকে তাদের অটোযোগে চিকিৎসার জন্য ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। স্থানীয় সাংবাদিকসহ জরুরি বিভাগে ভর্তির জন্য গেলে এমবিবিএস ডাক্তারের চেয়ারে বসা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার আব্বাস আলী প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীদেরকে চলে যেতে বলেন। রোগীদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় সাংবাদিক সহ পত্রিকা এজেন্ট বারংবার ভর্তি করানোর জন্য অনুরোধ করলে আব্বাস আলী খারাপ আচরণ এবং রোগীদের ভর্তি করাতে অস্বীকৃতি জানান। তখন হাসপাতালের এমারজেন্সি নাম্বারে কল করলে কর্তব্যরত সহকারী সার্জন মোছাঃ এজাজুন্নাহার রোগীদের দ্বিতীয় তলায় বেডে নিয়ে দেখে চিকিৎসা প্রদানসহ চিকিৎসাপত্রে ভর্তি করানোর নির্দেশ দিলেও এমারজেন্সিতে বসা আব্বাস আলী উত্তেজিত হয়ে বলে আমি রোগীদেরকে ভর্তি করাতে পারবোনা। আপনাদের কি করার আছে করেন।
বিষয়টি সন্ধ্যা ৭; ৭ মিনিটে ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচও এবং সিভিল সার্জন দিনাজপুরকে জানানো হলে দুইজন রোগীকে ভর্তি করান। এমারজেন্সিতে এমবিবিএস মেডিকেল অফিসারদের পরিবর্তে উপ-সহকারীদের মেডিকেল অফিসারদের চেয়ারে বসে চিকিৎসা প্রদানের বিষয় জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন তারা মেডিকেল অফিসারদের চেয়ারে বসে চিকিৎসা প্রদান করতে পারেনা। তারা মেডিকেল অফিসারদের সহযোগিতা করবে। এমারজেন্সিতে কেনো মেডিকেল অফিসার বসেননা সে বিষয়টিও আমি দেখবো। প্রসংগত, বহির্বিভাগে সকাল ১০ থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত এমবিবিএস ডাক্তারেরা চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মেসিতে পর্যাপ্ত মূল্যবান ঔষধ সরবরাহ থাকলেও ঔষদের তালিকা প্রদর্শন না করায় প্রয়োজনীয় অনেক ঔষধ রোগীদেরকে বাহিরের দোকান থেকে কিনতে হয়। দুস্থ ও নিম্ন আয়ের অনেকের বাহিরের দোকান থেকে ঔষধ কিনার সে সামর্থ থাকেনা। অথচ চিকিৎসা সেবা পাওয়া তাদের মৌলিক অধিকার।
উল্লেখ্য, ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি ও সচেতন এলাকাবাসী হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক মোঃ ইজাজুল ইসলাম ও মালি মোঃ মনিরুজ্জামান ৫-১০ বছর যাবত একই কর্মস্থলে চাকুরি করায় তাদের অন্যত্র বদলীর দাবি জানান। ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আপনার মতামত লিখুন :