ক্রীরা প্রতিবেদক ->>
প্রথমার্ধেই বাজি জিতে গিয়েছিল মরক্কো। কানাডার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গিয়ে নক আউট পর্বের সুবাস পেতে থাকে ফিফা র্যাংকিংয়ের ২২তম দলটি। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শেষে সমীকরণে পরিবর্তন হয়নি।
৩৬ বছর পর বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে যেতে এক পয়েন্টই যথেষ্ট ছিল তাদের। সেখানে অসাধারণ ফুটবলে তারা পেয়ে যায় পূর্ণ তিন পয়েন্ট। আকাশে ডানা মেলে উড়তে তাদের আর আটকায় কে? দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামে তাদের জয়গানেই বেজে উঠে বিজয়ের গান।
শেষবার ১৯৮৬ সালে তারা নকআউট পর্বে উঠেছিল। তিন যুগ পর একই আনন্দে মেতে উঠে প্রায় একই রকম পরিস্থিতি পেরিয়ে। সেবার লিগ পর্ব শুরু করে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র করে। এবার ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ড্র। দ্বিতীয় ম্যাচও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র। এবার অবশ্য বেলজিয়ামকে ২-০ গোলে হারিয়ে। শেষ ম্যাচে পর্তুগালকে হারায় ৩-১ ব্যবধানে। এবার কানাডাকে ২-১ গোলে উড়িয়ে।
সেবারও তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রি কোয়ার্টারে যায়। এবারও তাই। তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৭। রানার্সআপ হয়ে দ্বিতীয় পর্বে উঠা ক্রোয়েশিয়ার পয়েন্ট ৫। তিন ম্যাচে এক জয়ের সঙ্গে দুই ড্র তাদের। এই গ্রুপ থেকে সেরা ষোলোতে উঠা হয়নি বেলজিয়াম ও কানাডার।
মাঠে নেমে চতুর্থ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন হাকিম জিচ। ডি বক্সের বাইরে জটলা থেকে বল পেয়ে এক টাচে এগিয়ে ডানপায়ে জোরালো শট নেন হাকিম। গোলরক্ষক ডানদিকে ঝাপিয়ে বল আটকাতে চেষ্টা করেও পাননি। ২৫ মিনিটে কানাডার জালে দ্বিতীয় গোল দেয় মরক্কো। এবার দলের অন্যতম সেরা তারকা নৌসাইর গোল করেন। হাকিমির বাড়ানো পাস থেকে লক্ষ্যভেদ করেন নৌসাইর।
মিনিট পনের পরই এবারের বিশ্বকাপ পেয়ে যায় প্রথম আত্মঘাতি গোল। নায়েফ আগুয়ের্ড ভুল পায়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের জালেই বল পাঠিয়ে দেন। তাতে কানাডা পেয়ে যায় প্রথম গোল। যা কাতার বিশ্বকাপের একশতম গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দল একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও গোল ব্যবধান কেউ বাড়াতে পারেনি, কেউ কমাতে পারেনি। তাতে মরক্কোর ইতিহাস লিখা হয়ে যায় ৩৬ বছর পর। বিশ্বকাপে তাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল দারুণভাবে। র্যাংকিংয়ে এগারধাপ এগিয়ে থাকা ক্রোয়েশিয়াকে রুখে দিয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে ইউসেফ এন নেসিরি, হাকিম জিয়েশরা। পরের ম্যাচে তারা স্রেফ চমকে দেয় বিশ্বকে। র্যাংকিংয়ের দুই নম্বর দল বেলজিয়ামকে ২-০ গোলে হারিয়ে নক আউট পর্বে এক পা দিয়ে রাখে দক্ষিণ আফ্রিকার দেশটি। শেষ ম্যাচেও নিজেদের পারফরম্যান্সের ধার ধরে রেখে কানাডাকে উড়িয়ে দেয়।
প্রায় ৪০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে মরক্কো নিজেদের অপেক্ষা ঘুচানোর দিনে কানাডাকে লজ্জাও দিয়েছে। বিশ্বের প্রথম দল হিসেবে দুই বিশ্বকাপে সবকটি ম্যাচ হারের এবং গোল হজমের বিব্রতকর রেকর্ডকে সঙ্গী করেছে তারা।
আপনার মতামত লিখুন :