ArabicBengaliEnglishHindi

নীলফামারী থানায় জ্বীনের বাদশা গ্রেফতার: প্রতারনার সামগ্রী উদ্ধার


প্রকাশের সময় : মে ২৬, ২০২২, ৮:৫৩ অপরাহ্ন / ৫২
নীলফামারী থানায় জ্বীনের বাদশা গ্রেফতার: প্রতারনার সামগ্রী উদ্ধার

জিকে রউফ (নীলফামারী) ->>
নীলফামারীর জেলা সদরের আশরাফ আলী (৪৮) প্রতারনার স্বীকার হয়েছিলেন জ্বীনের বাদশাখ্যাত ( আফজাল@ করিম- ৫২) প্রতারকের নিকট। প্রতারনার স্বীকার হয়ে গোয়ালের গরুসহ আবাদী জমি বিক্রি করে প্রতারকের হাতে তুলে দেন ৮ লক্ষ টাকা। অবশেষে গ্রেফতার হলেন জ্বীনের বাদশা সেই সাথে উদ্ধার হলো কথিত জ্বীনের সাথে চুক্তি করার কাজে ব্যবহ্রত নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্প।

কথিত জ্বীনের বাদশা, আফজাল @ করিম (৫২), পিতা-মৃত জন মামুদের পুত্র কিসামত দোগাছী টুপামারী, নীলফামারী সদরের একজন স্থায়ী বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী জানায়,প্রতারক চক্রের মূল হোতা আফজাল সে নিজেকে জ্বীনের বাদশা বলিয়া
দাবি করে। গত ইং ০৫/০৯/২০২ইং আসামী আফজাল @ করিম (৫২) হঠাৎ তাহার বাড়ীতে উপস্থিত হইয়া কিছু সাহায্য চায়। তখন আসামীকে ০১ কেজি চাল প্রদান করেন । তখন উক্ত আসামী বাদীর নিকট ০১টি কুরআন শরীফের টাকা চায়। টাকা না থাকার কারণে আসামীকে আবারো নগদ ১৫০/-টাকা প্রদান করেন । কিছুক্ষণ পর উক্ত আসামী ভুক্তভোগীকে আবার বলেন যে, তোমার ঘরে খারাপ জ্বীন বাসা বাঁধিয়াছে। খারাপ জ্বীন প্রাথমে তোমার স্ত্রী সন্তানদের ক্ষতি করিবে, পরে সব শেষে তোমার ক্ষতি করিবে। এই বলিয়া মোবাইল নম্বর লইয়া প্রথম দিন চালিয়া যায়। পরবর্তীতে এক দিন পর গত ইং ০৭/০৯/২০২১ তারিখ দিবাগত রাত্রী ১২.০০ ঘটিকার পরে তাহার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হইতে আমার ভুক্তভোগীর নম্বরে ফোন করিয়া বলেন যে, তোমাদের ঘরে খারাপ জ্বীন তাড়ানোর জন্য ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে।

ভুক্তভোগীর নিকট টাকা না থাকায় ০৭ দিন পরে আসামীকে তাহার বিকাশ নম্বরে ১৫ হাজার টাকাপ্রেরন করেন । পরবর্তীতে আসামী পূনরায় বাদীর বসত বাড়ীতে উপস্থিত হইয়া বলে যে, তোমরা ১০ মিনিটের জন্য ঘরের বাহিরে যাও তাহার কথা মত বাড়ীর সকলেই ঘরের বাহিরে গেলে আসামী কৌশলে লাল কাপড় দ্বারা বাঁধা একটি পুটলী ঘরের ট্রাংকের মধ্যে রাখিয়া দিয়া ঘরের ভিতরে যাইতে বলিয়া আসামী চলিয়া যায়। ০২ দিন পর উক্ত আসামী ফোন করিয়া বলে যে, তোমার ঘরে রক্ষিত ট্রাংকের মধ্যে ভালো জ্বীনের বাদশার দেওয়া গুপ্তধন রহিয়াছে যাহা আমি দেখিতে পাইতেছি, তোমরা দেখিতে পাইবে না। ট্রাংকে নতুন একটি তালা লাগাইয়া চাবিটা আমাকে দিয়ে দাও, কাউকে কোন কিছু বলা যাবে না। আমার অনুমতি ছাড়া উক্ত ট্রাংক খোলা যাবে না। ট্রাংক খুললে তোমাদের বড় বিপদ হইবে। এর পর ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন সময়ে আসামী সু-কৌশলে বাদীর নিকট হইতে নগদ ৪লক্ষ ২০ হাজার টাকা গ্রহন করে এবং বাদীর ভাতিজী মোছাঃ রাশিদা বেগম (৩০) এর নিকট হইতে একই কায়দায় বিভিন্ন সময়ে নগদ ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করে।

আফজালের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও চাপে বাধ্য হইয়া আশরাফ এবং তাহার ভাতিজী রাশিদা -২৫/১১/২০২১ তারিখ আসিয়া নগদ ৩০ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং একই তারিখ আফজালের কথামতে জ্বীনের বাদশা মামলার বাদীকে সম্পত্তি দেয়ার অজুহাতে আমাদের পূর্বে ক্রয়কৃত ১০০/-টাকা মূল্যের ০৩টি ও ৫০ টাকা মূল্যের ০৩ টি নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্প যাহাতে আসামী তাহার বসতবাড়িতে একই তারিখে আমার, আমার স্ত্রী মোছাঃ আছফুল বেগম ও ভাতীজি মোছাঃ রাশিদা বেগম এর স্বাক্ষর করিয়া নেয় এবং তিনি বলেন যে, জ্বীনের বাদশা তোমাদের নামে সম্পত্তি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তোমাদেরকে ষ্ট্যাম্পগুলি ফেরত দেওয়া হবে।

কথিত জ্বীনের বাদশার কথামত আমি আমার স্ত্রী এবং ভাতিজী প্রত্যেকেই ননজুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে ¯^াক্ষর করিয়া সর্ব মোট ১৫০/-টাকা মূল্যের ০৩সেট স্বাক্ষরীত ননজুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্প হাতে দেই। আমাদের নিকট বিভিন্ন সময় নগদ টাকাসহ বিকাশ ও নগদ এ্যাপসের মাধ্যমে সর্ব মোট নগদ ৮লক্ষ টাকা গ্রহণ করে।

পরবর্তীতে গত ইং ০৮/০৫/২০২২ তারিখ দুপুর অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় আসামী ফোন করিয়া জানায় যে, জ্বীনের বাদশা তোমাদের স্বাক্ষর করা ষ্ট্যাম্পে ১০লক্ষ টাকা করিয়া লিখিয়া রাখিয়াছে। তিন জনে ১০লক্ষ টাকা করিয়া সর্ব মোট ৩০লক্ষ টাকা না দিলে তোমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হইবে বলিয়া ভয় প্রদর্শন করতে থাকে। মামলার বাদীর এরুপ তাথ্যের ভিত্তিতে নীলফামারী থানার মামলা নং-২৪(০৫)২০২২ রুজু পূর্বক অভিযান পরিচালনা করা হয় । জনাব মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান, বিপিএম. পিপিএম পুলিশ সুপার নীলফামারীর নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) নীলফামারী থানা সঙ্গিয় অফিসার ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযান পরিচালনার এক পর্যায়ে আসামীকে তাহার বসতবাড়ি হইতে গ্রেফতার কারা হয়। উক্ত সময় আসামীর বসতবাড়ি হইতে মামলার বাদী পক্ষের নিকট হইতে গৃহীত নন-জুডিসিয়াল ০৩সেট স্ট্যাম্পসহ বিপুল পরিমান ¯^াক্ষরিত নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। আসামী এবং আলামত সংক্রান্তে আইনগত বিষয়সমুহ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।