ফরিদপুর প্রতিনিধি ->>
মাদক কারবারি দুই সহোদর মানিক মাতুব্বর আর বাবুল মাতুব্বর। এলাকায় কেউ বাধা দিলেই তার ওপর চালানো হয় নির্মম নির্যাতন।
এমনকি তাদের হাত থেকে রেহাই পান না পরিবারের সদস্যরাও। কথায় কথায় রামদা নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হয় এই দুই ভাই। এতে অতিষ্ঠ তাদের আত্মীয়স্বজনসহ এলাকাবাসী। সর্বশেষ মাদক ব্যবসায় বাধা দিয়ে নির্মম হামলার শিকার হয়েছেন চাচা আনছার মাতুব্বর (৪০)। তাকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন মানিক ও বাবুল।
গত শনিবার (২৭ আগষ্ট) বিকেলে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বাসুয়ারকান্দী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি এখন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। আনছার ওই গ্রামের মৃত মজিদ মাতুব্বরের ছেলে। আর হামলাকারী মানিক আর বাবুল আহত আনছারের চাচাতো ভাই সোবহান মাতুব্বরের ছেলে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
আহতের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ময়ূরী বেগম ও ভাতিজা রহিম মাতুব্বর বলেন, আনছার আর মানিক-বাবুলের বাড়ি পাশাপাশি। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। কিন্তু প্রতিদিন মানিক-বাবুলের বাড়িতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন মাদক দ্রব্য কিনতে আসে। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা মাদকসেবীরা আমাদের বাড়ির উঠান দিয়ে যাওয়া-আসা করে। তাদের বেপরোয়া চলাচলের কারণে বাড়ির নারীরা আতঙ্কে থাকেন। ২০-২৫ দিন আগে আনছার বাড়ির ওপর দিয়ে মাদকসেবীদের চলাচল করেত নিষেধ করেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের একটি ভ্যান চুরি করে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে বাবুল ও মানিকের সঙ্গে আনছারের কথা কাটাকাটি হয়। গত শনিবার বিকেলে বাড়ির সামনে রসুলপুর কুমার নদীর ঘাটে পাট ধোয়ার কাজ করছিলেন আনছার। এ সময় মানিক ও বাবুলসহ তার সহযোগীরা সেখানে এসে আনছারকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে র অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন।
মানিক ও বাবুলের চাচা জামাল মাতুব্বর বলেন, ওরা আমার আপন ভাতিজা। কিন্তু ওদের মাদক কারবারের বিরোধী আমি। যে কারণে ওরা আমাকে দেখতে পারে না। পুরো এলাকার যুব সমাজ নষ্ট করছে ওরা। মাদক কারবারে কেউ বাধা দিলে তাকে ওরা মারধর করে। কথায় কথায় রামদা নিয়ে সবার ওপর চড়াও হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আমার চাচাতো ভাই আনছারকে কুপিয়ে জখম করেছে।
মানিক ও বাবুলের দাদা হামেদ মাতুব্বর বলেন, আমার নাতী মানিক ও বাবুল মাদক কারবারি। এলাকাকে ওরা নষ্ট করে ফেলছে। অনেক চেষ্টা করেছি ওদের ভাল করতে। কিন্তু ওরা ভাল হবে না। ওদের মাদকের ব্যবসায় বাধা দিলে উল্টা আমাদের ভয় দেখায়। ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সাদিক বলেন, এ ঘটনায় থানায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। পরে হামলার সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপরজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আপনার মতামত লিখুন :