ভালো নেই লালমনিরহাটের ভাষা সৈনিকরা
প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২, ২০২২, ৯:৪০ অপরাহ্ন /
৪৩
লালমনিরহাট প্রতিনিধি ->>
১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে। ভাষা সংগ্রামে পিছিয়ে ছিল না লালমনিরহাট। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত লালমনিরহাটের ছাত্রসমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব ধারাবাহিকভাবে মাতৃভাষার দাবিতে আন্দোলন করেছেন।
মহান ভাষা আন্দোলনে লালমনিরহাটের যেসব ভাষা সৈনিক সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের মধ্যে ২জন আজও বেঁচে আছেন। তাঁরা হলেন- আবদুল কাদের ভাসানী, মোঃ জহির উদ্দিন আহম্মদ। আর মৃত্যু বরণ করেছেন ১০জন। তাঁরা হলেন- আশরাফ আলী, ড. শাফিয়া খাতুন, মনিরুজ্জামান, আবদুল কুদ্দুছ, কমরেড শামসুল হক, মহেন্দ্র নাথ রায়, আবিদ আলী, জরিনা বেগম, জাহানারা বেগম (দুলু), কমরেড সিরাজুল ইসলাম।
আবদুল কাদের ভাসানী ও মোঃ জহির উদ্দিন আহম্মদঃ ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে লালমনিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় আবদুল কাদের ভাসানী ও মোঃ জহির উদ্দিন আহম্মদ ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। লালমনিরহাটে গঠিত ভাষা সংগ্রাম পরিষদের আবদুল কাদের ভাসানী সম্পাদক ও মোঃ জহির উদ্দিন আহম্মদ সভাপতি ছিলেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি হরতাল সমর্থনে আবদুল কাদের ভাসানী ও মোঃ জহির উদ্দিন আহম্মদ এবং ভাষা সংগ্রাম পরিষদের কয়েকজন সদস্য লালমনিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের বাড়ী পাঠিয়ে দেন। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে লালমনিরহাট থানা পুলিশ তাঁদের গ্রেফতারের জন্য বিদ্যালয় গেটে আসলে প্রধান শিক্ষক পুলিশকে বিদ্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি না দেয়ায় পুলিশ বাহিরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে যান।
পুলিশি গ্রেফতারেরর নতুন কৌশল এড়াতে ছাত্রনেতাগণ বিদ্যালয়ের পিছনে সুইপার কলোনি দিয়ে পালিয়ে যান। পরে তাঁরা চিহ্নিত হলে পুলিশ কারণে-অকারণে তাঁদের ধরে এনে লালমনিরহাট থানায় আটকিয়ে রাখা শুরু করলে তাঁরা বাধ্য হয়ে আত্মগোপন করে আন্দোলন চালিয়ে যান।
আবদুল কাদের ভাসানী ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। আবদুল কাদের ভাসানী এখন লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের হাড়ীভাঙ্গা (হলদীটারী) ও মোঃ জহির উদ্দিন আহম্মদ নওদাবস গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। তাঁদেরও শারীরিক অবস্থা একই।
জীবিত ভাষা সৈনিক আবদুল কাদের ভাসানী ও মোঃ জহির উদ্দিন আহম্মদ-এঁর খোঁজ রাখেন না কেউ। কিন্তু হ্যা, খোঁজ রাখেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন। তবে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে। তাদের একটি রুটিন মাফিক আমন্ত্রণ পত্র প্রেরণ করা হয়।
অতঃপর তাদের ২১ ফেব্রুয়ারির দিন সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া বছরের ফেব্রুয়ারি মাস ছাড়া, অন্যান্য ১১টি মাসে তাঁদের কোন খোঁজ খবর নেই না ।
আপনার মতামত লিখুন :