ArabicBengaliEnglishHindi

উরুগুয়েকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিতে চায় পর্তুগাল 


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৮, ২০২২, ১২:৩৪ অপরাহ্ন / ৫৭৪
উরুগুয়েকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিতে চায় পর্তুগাল 

ক্রীরা প্রতিবেদক ->>

আজ উরুগুয়ে বিপক্ষে গ্রুপণ্ডএইচ’এ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ী হতে পারলেই ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালের এক ম্যাচ হাতে রেখে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের নক আউট পর্ব নিশ্চিত হবে। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ১৬’তে উরুগুয়ের কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সোমবার দিবাগত রাত ১টায়।

ফার্নান্দো সান্দোসের পর্তুগাল আফ্রিকান ঘানার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতে ৩-২ গোলের উজ্জীবিত জয় দিয়ে বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করেছে। অন্যদিকে উরুগুয়ে এশিয়ান জায়ান্ট দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে গোলশুন্য ড্র করে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।

ঘানার সাথে পর্তুগালের হয়ে পেনাল্টিতে প্রথম গোলটি করে পাঁচ বিশ্বকাপে গোল করার বিরল এক কৃতিত্ব গড়েছেন রোনাল্ডো। ম্যাচের অনেকটা সময় জুড়েই পর্তুগাল ৩-১ গোলে এগিয়ে ছিল। কিন্তু ওসমান বুকারির ৮৯ মিনিটের গোলে হঠাৎ করেই আফ্রিকান জায়ান্টরা ম্যাচে ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। শেষ মুহূর্তে ইনাকি উইলিয়ামস ঘানাকে সমতায় ফেরানোর দারুন এক সুযোগ পেয়েছিলেন। পেনাল্টি বক্সে পর্তুগীজ গোলরক্ষক দিয়েগো কস্তার কাছ থেকে চতুরতার সাথে বল ছিনিয়ে নিয়েও পড়ে গেলে গোল আদায় করতে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত সান্তোসের দল স্বস্তিদায়ক তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। কাল জয়ী হতে পারলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটি পর্তুগালের জন্য নিয়ম রক্ষার ম্যাচ হয়ে দাঁড়াবে। আর এই সুযোগটা কোনভাবেই হাতছাড়া করতে চায়না রোনাল্ডো বাহিনী।

২০০৬ সালের পর থেকে বিশ্বকাপের শেষ ১৬ পার করতে পারেনি পর্তুগীজরা। এই গ্রুপের শীর্ষে থেকে পরের রাউন্ডে গেলে গ্রুপণ্ডজি’র রানার্স-আপদের সাথে তাদের খেলতে হবে। দলটি হতে পারে ব্রাজিল, সুইজার‌্যলান্ড, ক্যামেরুন কিংবা সার্বিয়ার মধ্যে যেকোন একটি দল।

চার বছর আগে উরুগুয়ে ও পর্তুগাল একে অপরের সাথে শেষ ১৬’তে খেলেছে। অভিজ্ঞ তারকা এডিনসন কাভানির জোড়া গোল করে উরুগুয়ে পর্তুগালকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শেষ আটে গিয়েছিল। সে কারণে পর্তুগালের সামনে চার বছর আগের পরাজয়ের মধুর প্রতিশোধ নেবার সুযোগও এসেছে। কাতারে অবশ্য কোন দলের দিকেই ফেবারিটের কাটা দেখা যাচ্ছেনা।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের হয়ে দিয়েগো গোডিন ও ফেডেরিকো ভালভার্দে পোস্টে বল না লাগালে ম্যাচের ভাগ্য হয়তো ভিন্ন হতে পারতো। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি গোলশুন্য ড্র হয়। দিয়েগো আলোনসোর দল কখনই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় হয়নি কিংবা পরের রাউন্ডের জন্য অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি। কিন্তু পর্তুগালের বিরুদ্ধে পরাজিত হলে ঘানার সাথে শেষ ম্যাচের আগে বেশ বিপদেই থাকবে উরুগুয়ে।

প্রথম বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে ১৯৫০ সালে দ্বিতীয়বারের মত শিরোপা ঘরে তুলেছিল। সর্বশেষ তিনটি বিশ্বকাপেও তারা ইতিবাচক ফলাফল নিয়েই বাড়ি ফিরেছে। ২০১০ সালে চতুর্থ হবার পর ২০১৬ বিশ্বকাপে শেষ ১৬ ও চার বছর আগে রাশিয়ায় কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে দক্ষিণ আমেরিকান দলটি। বিশ্বকাপে পরের রাউন্ডে খেলার অভিজ্ঞতা বেশ সমৃদ্ধ লা সেলেস্তেদের। আর সেই অভিজ্ঞতাই এবার একটু আগে ভাগে কাজে লাগাতে চায় উরুগুয়ে।

এর আগে তিন বার পর্তুগালের মোকাবেলা করেছে দক্ষিণ আমেরিকান দলটি। এর মধ্যে সর্বশেষটি ছিল চার বছর আগে বিশ্বকাপের শেষ ১৬’তে। কাতার বিশ্বকাপের দলেও উরুগুয়ে অভিজ্ঞদের ওপরই আস্থা রেখেছে। গোডিন, মার্টিন কাসেরেস, কাভানি ও লুইস সুয়ারেজের কাঁধে ভর করে আরো একবার শেষ ১৬’তে যাওয়াই এখন তাদের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ।

ঘানা ম্যাচের পর পর্তুগাল শিবিরে কোন ইনজুরির খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্রধান কোচ সান্তোস পরের ম্যাচে দলে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচে ৫৬ মিনিটে উইলিয়াম কারভালহো যখন মাঠ নেমেছিলেন তখন মধ্যমাঠ যেন আরো বেশী সড়ব হয়ে উঠে। সে কারনেই কালকের ম্যাচে ইউরোপিয়ান দলটির মধ্যমাঠ সামলানোর দায়িত্ব ওটাভিওর থেকে কালভালহোর ওপর চলে আসতে পারে। বেঞ্চ থেকে উঠে এসে রাফয়েল লিয়াও গোল করেছেন। কিন্তু তার বদলী বেঞ্চে থাকার সম্ভাবনাই বেশী। রোনাল্ডোকে সহযোগিতা করতে ব্রুনো ফার্নান্দেস ও হুয়াও ফেলিক্সই মূল দলে থাকছেন। রক্ষনভাগে দিয়োগো ডালট মূল একাদশে ফিরতে পারেন। লেফট-ব্যাক হিসেবে হুয়ায় ক্যান্সেলোই থাকবেন।

উরুগুয়ে শিবিরে এখনো রোনাল্ড আরাউজোর ফিটনেস সংকট কাটেনি। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে উরুর অস্ত্রোপচার থেকে সেড়ে উঠে এখনো দলে ফিরতে পারেননি এই সেন্টার-ব্যাক। বার্সেলোনার এই ডিফেন্ডারের দ্বিতীয় ম্যাচেও না থাকা প্রায় নিশ্চিত। সে কারণে রক্ষনভাগে গুডিস, হোসে জিমিনেজ ও মাথিয়াস অলিভেরার সাথে কাসেরাস খেলবেন। মধ্যমাঠে যথারীতি থাকছেন মাটিয়াস ভেকিনো, ভালভার্দে ও রডরিগো বেনটানকার। ৩৫ বছর বয়সী সুয়ারেজের ফিটনেস কালকের ম্যাচের আগে আরো একবার পরীক্ষা করা হবে।