ArabicBengaliEnglishHindi

মাধবকুণ্ডে ফেলা হচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্য, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ


প্রকাশের সময় : মে ৮, ২০২২, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন / ৭৫
মাধবকুণ্ডে ফেলা হচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্য, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ

মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি ->>

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কের ভেতরে পর্যটকেরা যত্রতত্র ফেলছেন প্লাস্টিক বর্জ্য। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে চার দিনে এ পর্যটন স্পটে প্রায় ১৫ হাজার পর্যটক এসেছেন। তারা যত্রতত্র প্লাস্টিক বোতল, চিপসের প্যাকেট, খাবার প্যাকেট ফেলেছেন। এতে দূষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।

চলতি বছরের ২৬ ফেব্র“য়ারি মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কের পরিবেশ রক্ষায় প্রধান ফটকের ভেতরে কোনো ধরনের খাবার ও প্লাস্টিক দ্রব্য নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞা জারি করেই যেন দায় সেরেছেন সংশ্লিষ্টরা। ঘুরতে আসা পর্যটকেরা সেখানে অবাধে ফেলছেন প্লাটিক বর্জ্য। তবে এ ব্যাপারে পর্যটকদের সচেতনতায় সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে কোনো রকম উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, খাবার ও প্লাস্টিক দ্রব্য নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি তারা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। শুধু ঈদের দিন থেকে পর্যটক বেশি হওয়ার কারণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।

শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্ক এলাকায় যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা, প্লাস্টিক বোতল, চিপসের প্যাকেট, খাবার প্যাকেট পড়ে আছে। পর্যটকেরা বাইরে থেকে এসব খাবার ও প্লাস্টিক দ্রব্য নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। কেউ কেউ আবার জলপ্রপাতের অদূরের অস্থায়ী দোকান থেকে এসব কিনে যত্রযত্র ফেলছেন। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার অনুরোধপূর্বক সাইনবোর্ড থাকা সত্বেও সেখানে বর্জ্য ফেলছেন না তারা।

ভৈরব থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন ব্যবসায়ী মো. মজনু সওদাগর হাসান। তিনি বলেন, ‘মাধবকুণ্ড প্রথম এসেছি। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ অনেক সুন্দর। ঘুরতে এসে ভালো লাগছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাটাও ভালো। তবে মন খারাপের বিষয় হচ্ছে এখানে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা দেখে। আমরা (পর্যটকেরা) অনেকেই সচেতন নই। পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে। যত্রতত্র ব্যবহৃত প্লাস্টিকের জিনিস আমরা ফেলে যাই। এগুলো পর্যটন স্পটের সৌন্দর্য হানি ঘটে। শুধু সৌন্দর্য হানি নয়, প্লাস্টিক বর্জ্য বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। সংশ্লিষ্টদের এ দিকে খেয়াল দেওয়া দরকার।

সেখানে দেখা হয় স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন থেকে খাবার ও প্লাস্টিক দ্রব্য নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু শুরু থেকেই তা কার্যকরে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। ভেতরে বিভিন্ন অস্থায়ী দোকানে চিপস, চানাচুর, পানি (প্লাস্টিকের বোতলে), কোমল পানীয় (প্লাস্টিকের বোতলে) ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে। বাইরে থেকেও পর্যটকেরা প্লাস্টিকদ্রব্য নিয়ে প্রবেশ করছেন। এরপর যত্রতত্র তা ফেলে যাচ্ছেন। এতে পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সৌন্দর্য হারাচ্ছে জলপ্রপাত এলাকা।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বলেন, ‘পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত রাখতে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল তা শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু ঈদের দিন থেকে আমরা কঠোরতায় যাইনি। প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজারের মতো পর্যটক আসতেছেন। তাদের জন্য ভেতরে পানি ও অন্য সুবিধা দেওয়া কষ্টকর। ঈদের এই কয়েকটা দিন চলে গেলে ইজারাদার ভেতরটা পরিস্কার করবে। তারপর আগের সিস্টেমে চলে যাবে।