ArabicBengaliEnglishHindi

এবছরে টিকটক করতে গিয়ে প্রাণ গেছে ১০ জনের


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৫, ২০২২, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন / ১৬৬
এবছরে টিকটক করতে গিয়ে প্রাণ গেছে ১০ জনের

বিশেষ প্রতিনিধি ->>
একবিংশ শতাব্দীতে তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া কোনা কিছু চিন্তাই করা যায় না। টিকটক অ্যাপস বর্তমান বিশ্বে বহুল আলোচিত ও সমালোচিত একটি অ্যাপ। চলতি বছর এখন পর্যন্ত টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংগঠনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত কয়েক বছর ধরে চীনা শর্ট ভিডিও মেকিং প্লাটফর্ম টিকটক’র অপব্যবহার এতটা বেড়েছে যে, বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এটি মৃত্যুফাঁদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

গত ৮ জুলাই নোয়াখালীর চাটখিলে টিকটক ভিডিও বানানোর সময় অসাবধানতাবশত পা পিছলে গেলে সানজিদা আক্তার নামে ১১ বছর বয়সী এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। সোমবার কুমিল্লায় চলন্ত ট্রেনের ছাদে টিকটক করতে গিয়ে পা পিছলে মেহেদী হাসান (১৫) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া টিকটককে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের মার্চে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত খুন হয়।

গত ২ মার্চ রাজবাড়ী জেলার কালোখালি উপজেলায় রেলব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে টিকটক করতে গিয়ে হোসেন (১৬) নামের একজন ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যায়। ৮ মে নড়াইলের কালিয়ায় টিকটক করতে বাধা দেওয়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করে সুমি আক্তার (১৯)। ১৬ মে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার শহরের লাল ব্রিজের অদূরে হৃদয় (১৫) নামে এক কিশোর টিকটক বানাতে গিয়ে কাটা পড়ে। ২২ মে নীলফামারীর সৈয়দপুরে টিকটক করতে গিয়ে নদীতে ডুবে মৃত্যু হয় মুস্তাকিম ইসলাম (১৬) নামে এক কিশোরের।

গত বছর ২০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে নির্মাণাধীন তিন তলা ভবনের ৭ থেকে পড়ে অনিল (১৪) বয়সী এক কিশোরের মৃত্যু হয়। তরুণ-তরুণীদের মৃত্যুর দায়ভার কোনওভাবেই টিকটক কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যেতে পারে না। এর দায়ভার তাদের নিতে হবে।

এ ছাড়াও আরও অনেক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে টিকটক বানাতে গিয়ে, যার সঠিক কারণ নির্ণয় না হওয়া এবং প্রকাশ না পাওয়ায় নাম পরিচয় তুলে ধরতে পারছি না। গত বছরের টিকটক বানানোর প্রলোভনে ভারতে তরুণী পাচার হয়েছিল। গত বছরের জুন মাসে টিকটকের ফাঁদে ফেলে এক তরুণীকেও ধর্ষণ করা হয়। তাছাড়া পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে তার অন্যতম কারণ টিকটক।

সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টিকটকের কারণে এসব মৃত্যু হলেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে কেউ মামলা করেননি। টিকটক বাংলাদেশের লাইসেন্সধারী কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। সরকার এর থেকে কোনো রাজস্বও পায় না। তাই আমাদের দাবি উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে টিকটকের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

উল্লেখ্য, টিকটকের ব্যবহার হয় মূলত তিনটা সেকশনে শর্ট ভিডিও, মিডল শর্ট এবং লং শর্ট ভিডিও। এই তিনটা সেকশনে কনটেন্ট তৈরি করা হয় টিকটকে। যেখানে গান কিংবা লিরিক্সের আদলে অঙ্গভঙ্গি করে কিংবা দুই ঠোঁট মিলিয়ে বা ফটো দিয়ে মানুষ টিকটকে কনটেন্ট তৈরি করে থাকেন। যেই কনটেন্ট গুলো দেখে শত শত মানুষ কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের ফলোয়ার হয়ে তাকে ফলো করেন। গুগলের একটি জরিপ অনুযায়ী টিকটকের ব্যবহারকারী বেশিরভাগ টিন এইজের ও উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণী।